নিজস্ব সংবাদদাতা: বাজারে আর আসবেনা,বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, ৩৩ বছরের পুরনো সংবাদপত্র’দৈনিক ভোরের কাগজ।
সোমবার রাজধানীর মালিবাগে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ের প্রধান ফটকে পত্রিকাটি আর বাজারে পাওয়া যাবেনা এ সংক্রান্ত নোটিস টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, “ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যা ২০-০১-২০২৫ ইং তারিখ থেকে কার্যকর হবে।
৩৩ বছরের পুরনো এই প্রত্রিকা বন্ধের খবর নিশ্চিত করে ভোরের কাগজের নির্বাহী সম্পাদক এ কে সরকার দৈনিক সারাদেশ কে বলেন, “যা শুনেছেন তা ঠিক আছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত বলব।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্যে, অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের বেতন স্কেলের সব সুযোগ সুবিধা এবং সমস্ত বকেয়া বেতনসহ সার্ভিস বেনিফিটের দাবি নিয়ে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন ভোরের কাগজে কর্মরত সাংবাদিকরা
এতে মালিকপক্ষকে লিখিত একটি দাবি জানায় কর্মচারীরা। দাবি নামা পাওয়ার পর হঠাৎ করে পত্রিকা বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ।
ভোরের কাগকে কর্মরত একাধিক সংবাদিক জানান,“আমরা দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় বৈষম্যের শিকার। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা সাংবাদিক-কর্মচারীরা দ্রুত কর্মসূচি ঘোষণা করব।”
একটি সূত্র জানায়, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মালিকপক্ষ ২০-৩০ জন নিয়ে পত্রিকা চালাবে, বাকিদের ‘ছাঁটাই করবে’ বলে একটি তথ্য পাওয়া গেছে।
কর্মরত সাংবাদিকরা জানান,“আমাদের বক্তব্য ছিল- যদি ছাঁটাই করা হয়, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু দাবি আছে, সেগুলো বিবেচনা করতে হবে কর্তৃপক্ষের।
সাংবাদিকের ভাষ্য, “ভোরের কাগজ অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করেছে- এমন ঘোষণা দিয়ে সরকার থেকে ৯০০ টাকা কলাম-ইঞ্চি বিজ্ঞাপনসহ সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। কিন্তু তারা এর কিছু বাস্তবায়ন করেনি। সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছে।
ছাঁটাই করতে হলে ওয়েজ বোর্ডের বেতন স্কেলের সকল সুযোগ-সুবিধাসহ সমস্ত বকেয়া বেতনসহ সার্ভিস বেনিফিট দিতে হবে।
“দ্বিতীয়ত, যদি ছাঁটাই করা না হয়- তাহলে অবিলম্বে ৮ম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করতে হবে। সকলকে নিয়োগপত্র দিতে হবে। তৃতীয়ত, ৮ম ওয়েজ বোর্ডের আওতায় যার যত বছরের পাওনা রয়েছে, সমস্ত বকেয়া বেতন ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পরিশোধ করতে হবে।
জানা যায়, ১৯৯২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘মুক্তচিন্তার দৈনিক’ স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলা সংবাদপত্র দৈনিক ভোরের কাগজ।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৬ সেপ্টেম্বর ভারতে পালালো কালে পত্রিকাটির সম্পাদক শ্যামল দত্তকে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত থেকে আটক করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। শ্যামল দত্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।