Shopping cart

  • Home
  • বাংলাদেশ
  • অপরাধ
  • বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত রুপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে নেই কোন আনন্দ

বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত রুপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে নেই কোন আনন্দ

নভেম্বর ৩, ২০২৫

বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত রুপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে নেই কোন আনন্দ।

বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত রুপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে নেই কোন আনন্দ।

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর: রংপুরের তারাগঞ্জে রোববার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন গণপিটুনিতে নিহত সেই রুপলাল দাসের মেয়ে নুপুর রবিদাস। বিয়ের বাড়ি হলেও বাস্তবে নেই তেমন আয়োজন। নেই ঢাকঢোলের কাঠিতে বাজ্যযন্ত্রের বাজনা, নেই তেমন কোন আনন্দ উল্লাস। আনন্দের মধ্যে ভাসছে গভীর শোক-বাবার আশীর্বাদ নেই। কারণ এই মেয়ের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করতে গিয়েই নিহত হন তারাগঞ্জের ঘনিরামপুরের রুপলাল দাস ও মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস।

রুপলাল ছিলেন তারাগঞ্জ বাজারের একজন জুতা সেলাইকারী। তিনি দুই মেয়ের পড়াশোনা ও সংসারের দৈনন্দিন খরচ মেটাতেন। বড় মেয়ে নুপুর ডিগ্রি পর্যায়ে পড়াশোনা করছেন, ছোট মেয়ে রুপা স্থানীয় বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। একমাত্র ছেলে জয় নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

স্বল্প পরিসরে নুপুরের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান রুপলালের স্ত্রী ভারতী দাস। তিনি বলেন, মেয়েকে তো বিয়ে দিতেই হবে। ধারদেনা করে বিয়ে দিতে হচ্ছে। অনেকেই তো কথা দিয়েছিল, কিন্তু এখন কেউ খোঁজ রাখে না। নুপুর বলেন, বাবা আমাকে ও আমার ভাইবোনদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। আমার বিয়ের আয়োজন হলেও মনের ভেতরে বাবা হারানোর কষ্ট রয়ে গেছে। বাবা আমাকে আশীর্বাদ করতে পারবেন না। জয় রবিদাস বলেন, বাবা থাকলে তিনিই সব করতেন। এই বয়সে আমাকে বিয়ের সব কাজ করতে হচ্ছে।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শিপু জানান, রুপলালের মেয়ের বিয়ের জন্য দলের পক্ষ থেকে ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই পরিবারের যে কোনো সমস্যা হলে দলের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানা জানান, রুপলালের মেয়ের বিয়ে বাবদ উপজেলা তহবিল থেকে ১ লাখ টাকা এবং সমাজসেবা কার্যালয় থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নুপুরের পড়াশোনার জন্য শিক্ষাভাতা, রুপলালের স্ত্রী ভারতী দাসের জন্য বিধবাভাতা এবং ছেলে জয়ের জন্য দোকানঘরের বরাদ্দ করা হয়েছে।

এর আগে, ১০ আগস্ট রুপলালের বাড়িতে মেয়ে নুপুরের বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করার অনুষ্ঠান ছিল। ভাগনি জামাই প্রদীপকে বিয়ের সেই আয়োজনে থাকার জন্য বাড়িতে ডাকেন রুপলাল। ৯ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিঠাপুকুরের ছড়ান বালুয়া এলাকা থেকে প্রদীপকে নিয়ে রুপলাল বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় কয়েকজন তাদের চোর সন্দেহে মারধর করেন। লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারধরের একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করা হয়। রূপলালকে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং পরদিন প্রদীপও মারা যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *