মহি উদ্দিন আরিফ ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
গেইম খেলার প্রলোভন দেখিয়ে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার হাওর এলাকার একটি গ্রামের বাসিন্দা ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালযের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্র (৮) কে বলাৎকার করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।বুধবার রাতে ওই ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে উপজেলার বালিজুরী মুজরাইপাড়া জামে মসজিদের ইমাম নাঈম হাসান (২৫) কে আসামি করে ধর্মপাশা থানায় এই মামলাটি করেছেন। অভিযুক্ত ওই ইমামের বাড়ি উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাদে হরিপুর গ্রামে।
ধর্মপাশা থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাদে হরিপুর গ্রামেন বাসিন্দা নাঈম হাসান বালিজুরী মুজরাইপাড়া জামে মসজিদে বছর খানেক ধরে ইমামতি করে আসছেন। প্রায় ছয়মাস ধরে প্রতিদিন সকালে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রটি ধর্মীয় শিক্ষার জন্য ওই জামে মসজিদে আসা যাওয়া করছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর শিশুটি মাগরিবের নামাজ পড়ার জন্য বালিজুরী মুজরাইপাড়া জামে মসজিদে যায়। মোবাইল ফোনে গেইম খেলার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রকে মসজিদের ইমাম নাঈম হাসান মসজিদ সংলগ্ন তার শয়ন কক্ষে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে তিনি তাকে বলাৎকার করেন। ঘটনাটি কারও কাছে না বলার জয় ছাত্রটিকে ভয়ভীতি দেখান নাঈম। এর পর থেকে তাকে বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনে গেইম খেলানোর কথা বলে মসজিদের ইমাম নাঈম তার শয়ন কক্ষে নিয়ে যেতেন। গত মঙ্গলবার বিদ্যালয় ছুটি হওয়ার আগেই ওই ছাত্রটপ নিজেদের বাড়ি চলে যায়। ছুটি হওয়ার আগেই কেন সে বাড়িতে চলে গেছে ঘটনাটি জানতে ওই ছাত্রের বাবা বুধবার সকাল ১১টার বিদ্যালয়টিতে যান। প্রধান শিক্ষক তখন ওই শিশুটির বাবাকে জানান যে ,মসজিদের ইমামসাহেব এসে আপনার কথা বলে তাকে নিয়ে গিয়েছিল। এ অবস্থায় ওই ছাত্রের বাবা মায়ের বিষয়টি সন্দেহ হয়। ছাত্রটিকে তার বাবা মা বিভিন্ন প্রশ্ন করা এক পর্যায়ে শিশুটি মসজিদের ইমাম নাঈম হাসানের দ্বারা বলাৎকারের শিকার হয়েছে বলে তার বাবা মাকে জানায়। পরে স্থানীয় লোকজন শিশুটির বাবা বুধবার দুপুরে ওই ইমামের শয়ন কক্ষে গিয়ে নাঈমকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ওই ছাত্রকে বলাৎকার করেছেন বলে স্বীকার করে ক্ষমা চান। গ্রামবাসী তাকে ওই ইমামকে আটক করে ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানালে।দ পুলিশ ওইদিন বিকেল চারটার দিকে ওই গ্রামে গিয়ে মসজিদের ইমামকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
অভিযুক্ত নাঈম হাসান বলেন,আমি ভুল করে ফেলেছি।এমন অপরাধ জীবনেও আর করব না।
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, আট বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্র (৮) কে বলাৎকারের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আটক থাকা মসজিদের ইমামকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বলাৎকারে শিকার শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানে হয়েছে।