নরসিংদী জেলায় যানবাহন চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের সময় হাতেনাতে আটক করা দুই চাঁদাবাজকে ছিনিয়ে নিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন নরসিংদী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন শামীম।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে নরসিংদী পৌর এলাকার আরশীনগর রেলক্রসিং-সংলগ্ন মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার বিবরণ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন আটজন পুলিশ সদস্য নিয়ে শহরের বীরপুর এলাকায় একটি লাশ উদ্ধারের স্থান পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে ফেরার পথে আরশীনগর মোড়ে তিনি দেখতে পান—যানবাহন চালকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছে কয়েকজন।
এসময় তিনি অভিযান চালিয়ে রমজান ও সেলিম নামে দুইজনকে হাতেনাতে আটক করেন। খবর পেয়ে সিএনজি ও অটোরিকশা স্ট্যান্ডের ইজারাদার আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জন সেখানে উপস্থিত হয়ে আটকৃতদের ছাড়িয়ে নিতে চাপ সৃষ্টি করেন। এএসপি আটকদের ছাড়তে অস্বীকৃতি জানালে তারা অতর্কিতভাবে পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং দুই চাঁদাবাজকে ছিনিয়ে নেয়।
হামলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন গুরুতর আহত হন। এছাড়া আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য কিলঘুষিতে জখম হন। স্থানীয়দের সহায়তায় আহত এএসপিকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চিকিৎসকের বক্তব্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফরিদা গুলশানারা কবির জানান,“অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ঘাড় ও পায়ে রক্ত জমে গেছে। আমরা কয়েকটি পরীক্ষা করেছি। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
এএসপি আনোয়ার হোসেনের বক্তব্য আনোয়ার হোসেন বলেন,“৩০-৩৫ জন অতর্কিতভাবে আমার ওপর হামলা চালায়। আমাকে কিলঘুষি মারে এবং লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে।”
ইজারাদারের বক্তব্য এদিকে নরসিংদী পৌরসভার সিএনজি ও অটোরিকশা স্ট্যান্ডের ইজারাদার আলমগীর হোসেন দাবি করেছেন,“পৌরসভা থেকে ২৫ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছি। কিন্তু পুলিশ আমাদের বৈধভাবে টাকা তুলতে দেয় না। এর আগেও আমাদের লোককে আটক করেছে। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
উল্লেখ্য, আলমগীর হোসেন নরসিংদী শহর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা যুবদল সভাপতি মহসীন হোসাইনের বড় ভাই।