দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ): সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে যুবদল সভাপতির নেতৃত্বে মসজিদ ও বাড়িঘরে হামলা- ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে।
ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি হারুন অর রশীদ’র নেতৃত্বে স্থানীয় একটি মসজিদ ও একাধিক বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বোগলাবাজার ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি বালুচর গ্রামের মর্তুজ আলী’রর ছেলে হারুনুর রশিদের অনৈতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে আছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে বোগলাবাজার ইউনিয়নের সোনাচুরা গ্রামে তার নেতৃত্বে একদল লোক পূর্বপরিকল্পিত ভাবে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা একটি মসজিদসহ একাধিক বসতবাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এবং ঘরে থাকা মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।
অভিযোগ করে স্থানীয়রা জানান, হামলা প্রতিরোধ করতে গেলে নারীসহ বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত করে তারা । আহতরা হলেন, ওই গ্রামের মুসলেম উদ্দিন’র ছেলে সাবেক সেনা সদস্য তাইজ উদ্দিন, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হাফিজ আহমদ তানিম, নোয়াগাঁও গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে শাহ আলমসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়ে বর্তমানে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ছিদ্দিক আলম বলেন, ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি হারুন অর রশীদ তার দলবল নিয়ে আমার ঘরে হামলা করে। ঘরের নতুন টিনের বেড়া রামদা দিয়ে কুপিয়ে সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলে তারা। হারুন অর রশীদ মাদক ও চোরাকারবারি হওয়ায় তার ব্যক্তিগত লাঠিয়ালি বাহিনী রয়েছে। তার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। আমি এর সঠিক বিচার চাই। সমাজ ও প্রশাসনের কাছে হারুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অভিযুক্ত যুবদল সভাপতি দলীয় ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাবাজি ও নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। এসব কারণে সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না বলেও জানান তারা।
ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুছ এক যৌথ বক্তব্যে বলেন,গ্রামের মসজিদে পরিকল্পিতভাবে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে যুবদল নেতা হারুন অর রশীদ। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা এই ঘটনার ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। আগামী শুক্রবার হারুনুর রশিদের বালিচড়া সমাজে এর বিচার দাবি করা হবে। বিচার না পেলে সমাজবাসী একত্রিত হয়ে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে জানান তারা।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত যুবদল সভাপতি হারুনুর রশিদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জামাল উদ্দিন বলেন, দলীয় পদ ব্যবহার করে কোনো ধরনের অপরাধ সংঘটিত করা দলীয় আদর্শের পরিপন্থী। প্রাথমিকভাবে এলাকাবাসীর কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছি। আমরা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করবো। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক বাবু মাদব রায় বলেন, বিষয়টি শুনেছি। দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি কিংবা কোনো অনৈতিক কাজ করার সুযোগ নেই।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার বিষয়ে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



