Shopping cart

Magazines cover a wide array subjects, including but not limited to fashion, lifestyle, health, politics, business, Entertainment, sports, science,

দোয়ারাবাজারের লক্ষিপুরে কালভার্ট ভেঙে খালে, শিক্ষার্থী -কৃষক-এলাকাবাসীর দূর্ভোগ চরমে

মে ১৪, ২০২৫

মারুফ খন্দকার, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ): সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার তিনটি স্কুলের শিক্ষার্থী এবং চারটি গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়কের মাঝে থাকা কালভার্টটি ভেঙে খালে পড়ে গেছে।

এরপর থেকেই এই কালভার্টটি এলাকার মানুষের জন্য হয়ে উঠেছে চরম দুর্ভোগের কারণ।

দীর্ঘ তিনমাস যাবত কালভার্ট ভেঙে থাকায় এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারছেনা শিক্ষার্থী, কৃষক ও এলাকার বাসিন্দারা। তিনমাস যাবত কালভার্ট ভেঙে এলাকাবাসী চরম ভোগান্তির স্বীকার হলেও এটি দেখার কেউ নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ কালভার্ট সংস্কারের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রকৌশলীর কাছে গেলে তারা বলেন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে যান। একতো ভাঙা কালভার্ট চলাচলে ভোগান্তি অন্যদিকে ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় প্রশাসনের ঠেলাঠেলিতে আরও হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, উপজেলার লক্ষিপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন হেলাল খসরু হাইস্কুল,বক্তারপুর সরকারি প্রাঃ বিদ্যা:, লিয়াকতগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজ ও লিয়াকতগঞ্জ (বাংলাবাজার) যাতায়াতের সড়কের বক্তারপুর গ্রামের মধ্যবর্তি কালভার্টটি তিনমাস যাবত ভেঙে পড়ে আছে। এটি ভেঙে পড়ার পর চারটি গ্রাম গহরগাঁও,কান্দাগাঁও,বক্তারপুর ও পূর্ব দিঘির পারসহ এলাকার প্রায় ৮ হাজার মানুষ এবং তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই পথে চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। স্থানীয় কৃষিপণ্য নিতে পারছেনা বাজারে। এতে ভোগান্তিতে এলাকাবাসীর অভিযোগ, বক্তারপুর গ্রাম হতে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন হেলাল খসরু হাইস্কুল পর্যন্ত ১ কিলোমিটার ও বক্তারপুর সরকারি প্রা: বিদ্যা: হতে লিয়াকতগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজ পর্যন্ত ১ কিলোমিটার রাস্তা এখনো কাঁচা। বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করাই কষ্টকর হয়ে ওঠে। এর মধ্যে আবার কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ায় স্কুল-কলেজগামীদের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়েছে। ফলানো ফসল বাজারে পাঠাতেও লোকসানে পড়েছেন এলাকার কৃষকদের।

স্থানীয় ভুক্তভোগী আব্দুল হারিছ বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন। রাস্তা পাকা করার কথা বলে আসছেন কয়েক বছর ধরে। কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এখন কালভার্ট ভেঙে পড়ে আছে। ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকার মানুষজন। বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী ও কৃষকরা।

কলেজ শিক্ষার্থী মোস্তাক আহমদ বলেন, ‘কালভার্ট ভাঙার পরে আমরা সড়কের নিচের জমি দিয়ে চলাচল করি। আমরা স্কুল-কলেজে আসা যাওয়া করতে কষ্ট হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে। একটা সাইকেল নিয়ে যাওয়ার উপক্রম নেই এই সড়কে। কিছুদিন আগে এক লোক এখান থেকে পড়ে আঘাত পেয়েছে । আমাদের কষ্ট দেখার মতো কেউ নেই। একতো রাস্তা কাঁচা হালকা বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে চলাচলে ভোগান্তি নেমে আসে। তার মধ্যে এতোদিন হয়ে গেলো এখনো কালভার্টটি সংস্কার হলোনা।

এখন এটাকে যদি সংস্কার করা না হয় তাহলে বর্ষায় চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা বর্ষাকালে ভাঙা কালভার্টের এই রাস্তায় কাঁদা হওয়ার কারণে ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারে না। কালভার্ট ভাঙার কারণে অনেককে হাত ধরে পার করাতে হয়। চলাচলের সড়কটিও কাঁচা থাকায় হালকা বৃষ্টিতে সড়ক দিয়ে চলাচল করতপ হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। কাঁচা রাস্তা পাকাকরণসহ দ্রুত এই কালভার্টটি সংস্কারের আবেদন জানান তারা।

মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন হেলাল খসরু হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুক আহমদ নয়া দিগন্তকে জানান, এই রাস্তা দিয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসে। কিন্তু কালভার্ট ভাঙার পরে তাদের আসতে কষ্ট হচ্ছে। অনেকে অন্য দিক দিয়ে প্রায় তিন-চার গুণ পথ ঘুরে স্কুলে আসে। আবার অনেকে আসেইনা। কালভার্টটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) ওমর গনি দৈনিক নয়া দিগন্তকে জানান, ৩ মাস হলো কালভার্টটি ভেঙে গেছে। এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি একাধিকবার জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি আমলে নেয় নি। কাঁচা সড়কের কথা তো বাদই দিলাম। বিগত দিনে খালি উন্নয়ন উন্নয়ন শুনেছি। কিন্তু চোখে দেখিনি।

লক্ষিপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক জানান,মাত্র ২ মাস হলো কালভার্টটি ভেঙেছে। বরাদ্দ না আসায় সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। কালভার্টটি সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশাকরি শীগ্রই এটি মেরামত করা হবে।

দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আব্দুল হামিদ জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। এখন জানতে পেরেছি। সংস্কারে ব্যবস্থা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *