স্টাফ রিপোর্টার: আজ বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫, বিশ্ব মুসলিমের জীবনে এক অনন্য মাহেন্দ্রক্ষণ—পবিত্র হজের শ্রেষ্ঠতম দিন ইয়াওমে আরাফাহ পালিত হচ্ছে। এই দিনে আরাফাতের বিশাল প্রান্তরে সমবেত হয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত লক্ষাধিক মুসল্লি। তাঁদের কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে তাওহিদের মহাবাণী:
“লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।”
আরাফাতের ময়দানে হাজিদের মিলনমেলা হজের মূল অংশ হিসেবে আজ সকালে ফজরের নামাজ আদায়ের পর থেকেই হাজিরা আরাফাতের ময়দানে জমায়েত হয়েছেন। সারা দিন জুড়ে তারা নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির এবং মোনাজাতে লিপ্ত থাকবেন। এই অবস্থান সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলবে—যা হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রোকন।
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮৫ হাজারের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবে হজ পালনে অংশ নিয়েছেন। তাঁদের অনেকেই এই মাহফিলে শরিক হয়ে দোয়ার মাধ্যমে নিজের ও পুরো জাতির জন্য কল্যাণ কামনা করছেন।
আরাফাতের খুতবা ও সরাসরি সম্প্রচার
আজ আরাফাতের পবিত্র ময়দানে হজের ঐতিহাসিক খুতবা প্রদান করবেন মসজিদুল হারামের খতিব শায়খ ড. মাহের বিন হামাদ আল-মুয়াইকিলি। এই খুতবা বিশ্বের নানা ভাষায়—including বাংলা—অনুবাদ করে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে, যেন সারা বিশ্বের মুসলিমরা তা উপভোগ করতে পারেন।
মুজদালিফা ও পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা
সূর্যাস্তের পর হাজিরা রওনা হবেন মুজদালিফার উদ্দেশ্যে, সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায়ের পর রাতযাপন করবেন। পরদিন, ১০ জিলহজ, ঈদুল আজহার দিন, তাঁরা মিনায় গিয়ে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, পশু কোরবানি এবং কাবা শরিফে তাওয়াফসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।
চিকিৎসা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাজিদের সুরক্ষায় গ্রহণ করেছে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি। প্রস্তুত রাখা হয়েছে শতাধিক ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক, ৩০ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী, এবং উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা। প্রতিটি হজযাত্রী যেন নির্বিঘ্নে এবাদত সম্পন্ন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে সর্বত্র।
আজকের এই দিন শুধু হাজিদের জন্য নয়, বরং গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য আত্মশুদ্ধির এক সুবর্ণ সুযোগ। যারা হজে যেতে পারেননি, তারাও রোজা, দোয়া, কোরআন তিলাওয়াত ও ইবাদতের মাধ্যমে এই দিনটিকে মর্যাদার সঙ্গে পালন করছেন।