চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় আমেনা বেগম (৩৩ভিকটিম) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ।
তবে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ায় আমেনার স্বামী ঘাতক ইয়াছিন আরাফাতকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি । বাকি
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নগরের ডবলমুরিং থানার সুলতান আহমেদের ছেলে জাহেদ নাবিদ (৩০), মো. সোহেল (৩৫) ও আনোয়ারার বৈরাগ এলাকার ইরফান হোসেন (২৯)। তাদের মধ্যে ইরফান হোসেন বাংলাদেশ পুলিশের কর্মরত কনস্টেবল। তিনি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার গুলশাখালী পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন।
গতকাল শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পুলিশ ব্যুরো ইন্ভিস্টিগেশনের কর্মকর্তারা জানান, গত ৩ অক্টোবর আনোয়ারার বৈরাগ এলাকার চায়না ইকোনমিক জোন অফিসের পূর্ব পার্শ্বে একটি পাহাড় ঘেরা পরিত্যক্ত ব্রিকফিল্ড থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়। ফিঙ্গারপ্রিন্টের সহায়তায় ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই ব্যুরো চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের কর্মকর্তারা।
আমেনা বেগম কুমিল্লার মুরাদনগর এলাকার কামাল উদ্দিনের মেয়েবলে জানা যায়। তিনি চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার বলুয়ার দিঘীর পাড় আবুল কালাম সওদাগরের কলোনিতে থাকতেন। ইয়াছিন আরাফাতের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
জানা যায় ঘটনার কিছুদিন আগে আমেনাকে না জানিয়ে ইয়াছিন আরাফাত আরেক নারীকে বিয়ে করেন। বিষয়টি জানা জানি হলে এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়।
এবং ইয়াছিন কু মতলব আটতে থাকেন, একপর্যায়ে ইয়াছিন তার দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু জাহেদ নাবিদ ও ইরফানের সঙ্গে আমেনাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইয়াসিন সোহেলের প্রাইভেট কার ভাড়া করে। এরপর বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমেনাকে প্রাইভেট কারে তুলে ইরফানের বাড়িতে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে আনোয়ারার বৈরাগ এলাকার চায়না ইকোনমিক জোন অফিসের পূর্ব পার্শ্বে একটি পাহাড় ঘেরা পরিত্যক্ত ব্রিকফিল্ডে নিয়ে গিয়ে আমেনাকে হত্যা করেন।
ঘটনার পর পরেই আমেনার স্বামী ইয়াছিন বিদেশে চলে যায়।
চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক এসআই শাহাদাত হোসেন জানান , মরদেহটি উদ্ধারের পর আংগুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এরপর তদন্ত করে প্রথমে ১৮ অক্টোবর প্রাইভেটকার চালক সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সোহেলের দেয়া তথ্যমতে জাহেদ নাবিদ ও ইরফানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা তিনজনই আমেনা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন।