ররান স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৭ জন। নিহতদের মধ্যে দুইজন শিক্ষক ও পাইলট থাকলেও বাকি সবাই শিশু শিক্ষার্থী বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, সোমবার রাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন অন্তত ৫ জন, যাদের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন ৭৮ জনের অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, আজ (মঙ্গলবার) থেকেই রক্তের প্রয়োজন পড়বে— এজন্য তিনি স্বেচ্ছায় রক্তদানের আহ্বান জানান।
প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, নিহত ২৭ জনের মধ্যে ৬ জনের মরদেহ এতটাই ঝলসে গেছে যে এখনও তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
দুর্ঘটনাটি ঘটে সোমবার (২২ জুলাই) দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ীর মাইলস্টোন স্কুলের একটি ভবনে আঘাত হানে এবং সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়।
দুর্ঘটনার সময় ভবনটিতে নার্সারি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১০০-১৫০ জন শিক্ষার্থী অবস্থান করছিল। স্কুল ছুটির ঠিক আগমুহূর্তে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে, যা মুহূর্তেই এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা এবং উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।
প্রশিক্ষণ বিমানটি ওইদিন দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে এবং মাত্র ১৩ মিনিট পরই বিধ্বস্ত হয় বলে জানায় আইএসপিআর।
এ ঘটনায় গোটা দেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সরকার মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সারাদেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। একইসাথে সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিহত ও আহতদের জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।