রবিউল হোসাইন সবুজ, কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লা লাকসাম পৌরসভার উদ্যোগে নির্মিত লাকসাম রেলওয়ে জংশন লেক পাড়ের এসএস দিয়ে তৈরি নিরাপত্তা বেরিকেট (রেলিং) চুরির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা লেক পাড়ের রেলিং খুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
লাকসাম পৌরসভা কর্তৃক পৌর নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন ও বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করতে মোট পাঁচটি লেক নির্মাণ করা হলেও এর মধ্যে লাকসাম জংশন লেক পাড় বর্তমানে একমাত্র কার্যকর ও জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। প্রতি শুক্রবার ও শনিবারসহ সরকারি ছুটির দিনে এখানে ভিড় করেন নানা বয়সী মানুষ—পরিবার, শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী ও বয়স্করা।
লেক পাড়কে ঘিরে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী ও স্থায়ী বিভিন্ন দোকানপাট। এর মধ্যে ফুচকা, আচার, কেক, ঝাল মুড়ি, ফুল, হালিম, বাদামসহ নানা খাবার ও পণ্যের দোকান উল্লেখযোগ্য। এতে একদিকে যেমন স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে লাকসাম শহরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও কিছুটা গতিশীল হয়েছে।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, রাত নামলেই লেক পাড়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা ও নজরদারির অভাবে দুর্বৃত্তরা নির্বিঘ্নে লেকের এসএস রেলিং চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে লেক পাড়ের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পথচারী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়ছে।
একাধিক পৌরবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“অনেকে রসিকতা করে বলেন—রেললাইন যে আছে, এটুকুই সৌভাগ্য। এভাবে চলতে থাকলে লেক পাড়ের কিছুই আর অবশিষ্ট থাকবে না।”
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, লেক পাড় শুধু একটি বিনোদন কেন্দ্র নয়, এটি লাকসাম পৌরবাসীর সমষ্টিগত সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষা করা নাগরিক দায়িত্ব। এজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠন, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
পৌরবাসীদের প্রস্তাব অনুযায়ী—রাতে নিয়মিত টহল ব্যবস্থা জোরদার করা,সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন,পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা নিশ্চিত করা,স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী টিম গঠন,চুরি প্রতিরোধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে লাকসাম জংশন লেক পাড়ের সৌন্দর্য ও নিরাপত্তা রক্ষা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা।
পৌরবাসীর দাবি, এই সুন্দর লেক পাড় যেন অবহেলা ও চুরির কারণে ধ্বংস না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।



