দোয়ারাবাজারে ৫ কোটি টাকার আম্পান প্রকল্পে অনিয়ম-দূর্নীতি, এলজিইডির যোগসাজশে ঠিকাদারের দায়সারা কাজ

সোহেল মিয়া, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ): সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় এলজিইডির অধীনে আম্পান পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৫ কোটি ৩২ লাখ ৪৫ হাজার ৪২০ টাকা ব্যয়ে সড়ক, পালাসাইডিং ও ড্রেন নির্মাণের কাজে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় এলজিইডির যোগসাজশে দায়সারা কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের চকবাজার–হরিণাপাঠি সড়কের উন্নয়ন কাজে এমন অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ এনেছে এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের দাবি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি অনিয়মে জড়িত।

প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী- ১,২০০ মিটার সড়ক, ১,৪০০ মিটার পালাসাইডিং ও ৪০০ মিটার ড্রেন নির্মাণের কথা থাকলেও গাইডওয়াল ও সুরক্ষা ব্লকে নিম্ন মানের কংক্রিট ও রড ব্যবহার করা হচ্ছে। কাজের বিভিন্ন অংশে অবহেলা এবং এলজি ইডি কর্মকর্তাদের তদারকির ঘাটতি ও দায়সারাভাবে দায়িত্বপালন করায় ভবিষ্যতে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গেলে এবং এলাকাবাসী দাবি করেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম. এ. ইঞ্জিনিয়ারিং ও নাফিজ আহমেদ (জেভি) এবং উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল হামিদ এর মধ্যে ‘যোগসাজশেই এই অনিয়ম হচ্ছে। তাদের মতে, মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া দুর্বল হওয়ায় প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এতে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “এ প্রকল্পে যে পরিস্থিতি চলছে তা শুধু ত্রুটি নয়—বরং নানা স্বার্থের প্রভাব থাকতে পারে।”

এতে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় চিকিৎসক ডা. আরবের রহমান খোকন, শাহ আলম, মনির হোসেন, ডা. সাইফুল ইসলাম, শরাফত আলী, মো. জাকির হোসেন, সাজিদুল ইসলাম, হারুন অর রশীদ, লিটন আহমেদ, নুর হোসেন, মাস্টার সিকান্দার আহমেদ, ইমাম হোসেনসহ অনেকে। তারা প্রকল্পের নথি জনসমক্ষে প্রকাশ, স্বচ্ছ তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগ আমরা গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি। নিম্নমানের কাজের কোনো সুযোগ নেই। যেসব স্থানে ত্রুটি পাওয়া যাবে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে তা সংশোধন করতে বাধ্য করা হবে। প্রকল্পটি মানসম্মতভাবে সম্পন্ন করতেই আমরা বদ্ধপরিকর।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুপ রতন সিংহ বলেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাজ করার সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।