Shopping cart

মোহনগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির জন্য সরকারি বেতন ভাতা বন্ধ

নভেম্বর ১১, ২০২৫

মোহনগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির জন্য সরকারি বেতন ভাতা বন্ধ। 

মোহনগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির জন্য সরকারি বেতন ভাতা বন্ধ। 

মোঃ মিজানুর রহমান (নন্দন) মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার ৫নং সমাজ সহিলদেও ইউনিয়নের অন্তর্গত হাছলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার সরকারি বেতন ভাতা বন্ধ করেছেন বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিনা অনুমতিতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। এলাকাবাসী চায় প্রধান শিক্ষকের স্হায়ী বরখাস্ত।

তথ্যানুসন্ধান করে জানা যায় গত ২৭/৮/২৪ খ্রিস্টাব্দে এলাকাবাসী,ছাত্র-ছাত্রী,‌অভিবাবক, শিক্ষক- কর্মচারীবৃন্দ উপজেলা চত্বরে প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও স্হায়ী বড়খাস্তের দাবীতে মানববন্ধন করে। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি জনাব রেজুয়ানা কবিরের নিকট একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

এর প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে মোহনগঞ্জ উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা (ভুমি) জনাব আঃ কাদের ৪ সেপ্টেম্বর/২৪ খ্রিস্টাব্দে হাছলা উচ্চ বিদ্যালয়ে তদন্তে এসে তিনি অভিযোগের সত্যতা পান।এ সময় তিনি উপস্থিত সকলকে জানান তিনি প্রত্যেকটি দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন।

এরপূর্বে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির সুস্ট তদন্তের জন্য গত ১ সেপ্টেম্বর/২৪ খ্রিস্টাব্দে প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলাম কে প্রধান শিক্ষকের দ্বায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয় এবং মোঃ বজলুর রহমান ঠাকুরকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দ্বায়িত্ব দেয়া হয়।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলাম ৫ সেপ্টেম্বর/২৪ থেকে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ১৭ সেপ্টেম্বর/২৪ পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।

  • তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে

১।তার মেয়ে তানজিনা আক্তার কে ২০২১ সালে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু ২০২৪ সালের ২৮/৮/২৪ ও ২৯/৮/২৪ মাত্র দুই দিন বিদ্যালয়ে আসেন।৪ বছরে দুই দিন বিদ্যালয়ে আসেন। কিন্তু মেয়ের বেতন ভাতা জাল স্বাক্ষরে প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলাম উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন।যা তদন্তে প্রমাণিত হয়।

২। সরকার প্রদত্ত শিক্ষক কর্মচারীর টিউশন ফি উপবৃত্তি ও ভর্তুকির টাকা নিজে তুলে আত্মসাৎ করেন।

৩। বিদ্যালয়ের আয়- ব্যয় হিসাব বিবরণী নাই।

৪।আপন ভাগ্নে হায়দারকে দিয়ে বিদ্যালয়ের জমিতে দোকান ঘর নির্মাণ করে বিদ্যালয়ের পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ব্যবসা করছে।

৫। বিদ্যালয়ের মাঠের মাঝখানে একটা পুকুর খনন করে মাছ চাষ করে লাভবান হচ্ছে।

৬। প্রধান শিক্ষক পকেট কমিটি গঠন করে তার পরিবারের ও নিকট আত্মীয় স্বজনদের নিয়োগ দিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে লাভবান হয়েছেনএবং বিদ্যালয়টিকে পারিবারিক প্রতিস্টানে পরিনত করে পাঠদান ব্যাহত করেছে

৭।আপন ভাগ্নিপতিকে আজীবন দাতা সদস্য করবে বলে দুই লক্ষ টাকা নিয়ে এক বছর সদস্য করে পরে তার স্ত্রীকে আজীবন দাতা সদস্য করেন।

৮। বিদ্যালয়ের পুরাতন দুইটা ঘর নিয়ে যায় এবং ফিসারির ঘর নির্মাণ করে।

৯।ভাগ্নে শিক্ষক বিদ্যালয়ের ৪র্থ তালায় রাত্রীযাপন করে।হাফ বিল্ডিংয়ে ধান ও খর রাখে।

১০।নিজ নাতির বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করে।

১১। বিদ্যালয়ের ১ শতাংশ জমি ভাগ্নে হায়দারের নিকট অবৈধভাবে বিক্রি করে দেয়।

১২। বিদ্যালয়ের জমি দেড় ১ একর হলেও পরে সোয়া একর দেখায়।

১৩। এলাকাবাসী জানতে চাইলে ভ্য়ভীতি দেখায়।

১৪। আজীবন দাতা সদস্য দুই জনের ৪ লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন।

১৫।স্হায়ী আমানত ও সাধারণ তহবিল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া ম্যানেজিং কমিটি পারিবারিক কমিটি তে রুপান্তরিত করেন।যার মাধ্যমে তিনি বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ করেন ও অবৈধ নিয়োগ বানিজ্য করেন।

বিদ্যালয়ের ১১ টি কম্পিউটারের মধ্যে মাত্র ১ টি কম্পিউটা আছে তাও অকেজো।এ ছাড়াও প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলাম সেচ্ছায় এক মাসের ছুটিতে যায়।

পরবর্তীতে প্রায় ১ বছরের অধিক হলেও তিনি আর বিদ্যালয়ে যোগদান করেননি।যা চাকুরি বিধিমালার সুস্পস্ট লংগন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছরের ১৩ নভেম্বর জেলা শিক্ষা অফিসার জনাব জুবায়ের আবু সাঈদ নেতৃত্বে সহকারি জেলা শিক্ষা অফিসার জনাব কামরুজ্জামান ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব জাহাঙ্গীর আলম তদন্তে আসেন এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায বলে উপস্থিত সকলকে জানান এবং তিনি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে একাধিকবার দৈনিক তৃতীয় মাত্রায় ও দৈনিক সারাদেশে ভিডিও রিপোর্ট ও প্রিন্ট নিউজ প্রকাশ করা হয়।

প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলাম বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নস্ট করাসহ নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ বজলুর রহমান ঠাকুর।

এলাকাবাসী, অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ প্রতিনিধিকে জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও কেন তাকে স্হায়ী বড়খাস্ত করা হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তারা জোর দাবি জানান প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলাম কে জরুরি স্হায়ী বরখাস্ত করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক এবং প্রধান শিক্ষকের সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করা হোক।

তারা আরো জানান, কিছুদিন পূর্বে প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলাম বিদ্যালয়ের পরিবেশ নস্ট ও অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষকের পদে বসার জন্য ষড়যন্ত্র করে এলাকার লোকজনকে প্রলোভন দেখিয়ে একটি নাটক সাজিয়ে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশ আনিয়ে থানা হেফাজতে গিয়ে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায়।সে বলে এলাকাবাসী নব সৃষ্টি করে তাকে আটকে রাখা হয়।

প্রকৃত পক্ষে প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলাম হাছলা গ্রামের পার্শ্ববর্তী কয়রা পাড়া গ্রামে গিয়ে অর্থ প্রদান করে তার পক্ষে আনার চেস্টা করে এ সময় গ্রামের লোকজন তাকে বাধা দিলে সে এক ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় নেতার বাড়িতে গিয়ে প্রবেশ করে।তখন গ্রামবাসী সেখানে অবস্থান নিলে সে ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহায়তা চায় এবং থানা হেফাজতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন মব সৃষ্টি করে তাকে আটকে রাখা হয়।

এডভোকেট মোঃ জসিম উদ্দিন তালুকদার বলেছেন এটা তার পুর্ব পরিকল্পিত সাজানো নাটক।সে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করতে এ সব ঘটনা তৈরি করছে। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে সে একজন প্রমানিত দুর্নীতি বাজ।যার কারনে তার বেতন ভাতা বন্ধ করেছেন কর্তৃপক্ষ। তিনি ‌সাংবাদিকগনকে সরেজমিনে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে লিখার বা সংবাদ পরিবেশন করা জন্য আহ্বান জানান এবং প্রকাশিত মিথ্যা সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

আমরা গ্রামবাসী এ প্রতিনিধি ও পত্রিকার মাধ্যমে আমরা এহেন মিথ্যা নাটক ও মিথ্যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলামের স্হায়ী বরখাস্ত ও দুর্নীতির বিচার দাবী করেন।

এ ব্যাপারে জানতে একাধিকবার ফোন করলেও প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়জুল ইসলাম ফোন রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *