পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা আবারও আলোচনায় এসেছেন তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ঘিরে। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, “আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী। শেখ হাসিনার আদর্শ ধারণ করেই আজ পর্যন্ত কাজ করছি।”
তাঁর এমন বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেউ এটি দেখছেন ‘রাজনৈতিক কৌশল’ হিসেবে, আবার কেউ বলছেন এটি ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে দেওয়া মন্তব্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে ভাই ও চাচাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগে সোহাগ মৃধা ব্যাপক সমালোচিত হন। অভিযোগ রয়েছে—ওই মামলায় রেহাই পেতে তাঁর ভাই ও চাচা ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার পরও হয়রানির হাত থেকে মুক্তি পাননি। এখনো তারা সেই ঘর পোড়ানোর মামলায় ভুগছেন।
সোহাগ মৃধার চাচা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করেন, “ওয়ারিশ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য সোহাগ তার ভাইকে হয়রানি করত। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে চুরির মামলায় ফাঁসায়। নিজের ঘরে আগুন দিয়ে আমার ও ভাই তৈমুর রেজার নামে মামলা দেয়। পরে ৫০ হাজার টাকা নিলেও আমাদের হয়রানি বন্ধ করেনি।
স্থানীয়দের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এলাকায় ‘আতঙ্কের পরিবেশ’ সৃষ্টি করেছিলেন সোহাগ মৃধা। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানো, সরকারি তহবিল আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মে তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এখন তিনি বিএনপি পরিচয়ে সক্রিয় হয়েছেন বলে অভিযোগ।
বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. সোহাগ হোসেন বলেন, “সোহাগ মৃধা কেমন মানুষ, তা এলাকাবাসী ভালোভাবেই জানে। একসময় সে আমার বাবাকেও হয়রানি করেছে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. ফকরুল আলম বলেন, “শুনেছি সোহাগ মৃধা আগে আওয়ামী লীগ করতেন। এখন নিজেকে বিএনপি বলছেন—কিন্তু কেউ নিজেকে বিএনপি বললেই সে আমাদের দলের সদস্য হয়ে যায় না। তিনি বিএনপির কেউ নন।”
অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা বলেন, “আমি কাউকে মিথ্যা মামলা দিইনি। আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী। ইউপি সদস্যদের নির্দিষ্ট দল থাকে না—যে সরকার আসে, তার হয়েই কাজ করি।”



