মোঃ সিদ্দিকুর রহমান মান্না বামনা (বরগুনা) প্রতিনিধি: বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জনগনের প্রাণ পুরুষ আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম মণি ১৯৫৫ সালে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার মনিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে যশোর বোর্ড থেকে এইচএসসি, ১৯৭৫ সালে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ও ১৯৭৬ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি প্রথম ক্লাস নিয়ে বের হয়।
কিছুদিন পরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রাহমানের অনুপ্রেরনায় জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৮৮ সালে একমাত্র সতন্ত্র প্রাথী হিসেবে বরগুনা-২ আসন থেকে প্রথম বার নির্বাচিত হন। ঐ সময় তিনিই ছিলেন সংসদের কম বয়সী সাংসদ এবং ঐ বছর তিনি পার্লামেন্টের বেস্ট পার্লামেন্টেরিয়ান এওয়ার্ড পান।
শুধু তাই নয় ১৯৮৮-১৯৮৯ সাল পর্যন্ত জনতা ব্যাংক এর পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ছিলেন এবং ১৯৮৯-১৯৯০ সাল পর্যন্ত রুপালী ব্যাংক এর চেয়ারম্যান ছিলেন । ১৯৯১ সালের নির্বাচনে একই আসন থেকে সতন্ত্র প্রাথী হিসেবে বিপুল ভোটে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। আবারও তৃতীয় বারের মতো ২০০১ সালে বিএনপি এর দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নজীরবিহীন ভোটে নির্বাচিত হন।
২০০১ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এর স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়াও ১৯৮৮-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত লন্ডন-বাংলাদেশ, ভারত-বাংলাদেশ, পাকিস্তান-বাংলাদেশ, জাপান-বাংলাদেশ, এই সব দেশের সাথে বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নের সংসদীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়াও সংসদের প্রতিনিধি হিসেবে আমেরিকা, জার্মান, ফ্রান্স, মালায়েশিয়া, ইরান ও পাকিস্তান এর বৈদেশিক দূতাবাস এর প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে ছিলেন।
এছাড়াও বাংলাদেশে ও থাইল্যান্ড এর প্রধান প্রতিনিধি ছিলেন। এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেও তিনি জাতীয় পর্যায়ে দক্ষিণ বঙ্গসহ সারা দেশের জেলেদেরকে জলদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা করা ও সুন্দরবন রক্ষার জন্য সংসদে প্রথম “বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড”এর বিল উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশের সংসদের ইতিহাসে এই একটি বিলই যা তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামীলীগ ও সমর্থন করেন যা বাংলাদেশের পার্লামেন্টে বিরল যুগোপযোগী ঐতিহাসিক এই বিলটি স্পীকার সংসদে পাস করেন। এই কোস্ট গার্ড এর ফলে দক্ষিণ বঙ্গসহ সারা দেশের উপকূলীয় এলাকার জেলেরা নদী-সাগরে নির্ভয়ে শান্তি-প্রিয় ভাবে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারছে। তিনি জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশের জনবহুল এলাকার প্রত্যেকটি ইউনিয়ন এর ৩ টি ওয়ার্ডকে ভেঙ্গে ৯ টি ওয়ার্ড এ বিভক্ত করার বিল পাস করেন, যার ফলে প্রত্যেকটি ইউনিয়ন মানুষের সেবার মান আরও সহজ-উন্নত হয়েছে। এলাকার উন্নয়নের জন্য রাস্তা-ঘাট, মৎস্য অবতরন কেন্দ্র, ব্যবসা-বানিজ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রাখেন।
এছাড়াও তিনি বরগুনা-২ আসনের গরীব মেহনতি মানুষের দারিদ্র বিমোচনের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। এছাড়াও তিনি নিজ উদ্যোগে ৫০ টি রেজিস্টার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা নির্মাণ করেন। তিনি পাথরঘাটা পৌরসভা, মাজাহার উদ্দীন টেকনিক্যাল কলেজ, পাথরঘাটা কলেজ, সৈয়দ ফজলুল হক ডিগ্রী কলেজ, বামনা ডিগ্রী কলেজ, জ্ঞানপারা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও চরদুয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন।
দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, তার এই জনপ্রিয়তা দেখে ২০০৭ সালে কিছু কুচক্রী মহল তার নামে মিথ্যা ও সাজানো মামলা করে এবং ধারাবাহিক উন্নয়নের অগ্রগতিকে বাধাঁগ্রস্থ করেও তাকে জনগনের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখেন। ২০০৭ সালের ১৫-ই নভেম্বর সিডর হলেও তাকে ওই কুচক্রী মহল মামলার ফাঁদে ফেলে এলাকার মানুষের পাশে দাড়াতে দেয়নি। এরপরে মিথ্যা মামলা গুলো সুপ্রিম কোর্ট একে-একে খারিজ করে দেয়।