ডেস্ক নিউজ: সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট দেখে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৬ বছরে এমন কিছু ভুল করেছে যার মাশুল এখন দলটিকে দিতে হচ্ছে। পারিবারিক আলোচনায় তিনি প্রায়ই বলেন, “ভুল না হলে এই পরিণতি হতো না। আজকের অবস্থা আমাদের সেই ভুলেরই শাস্তি।”
তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও শ্যালক ডা. আনম নওশাদ খান সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান। থাইল্যান্ডে চিকিৎসা শেষে আবদুল হামিদের সঙ্গে গত ৭ মে যাত্রা করেন তিনি এবং দেশে ফেরেন ৮ জুন রাত ১টা ২৫ মিনিটে, টিজি-৩৯৯ ফ্লাইটে।
নওশাদ খান জানান, বর্তমানে আবদুল হামিদ একেবারেই পারিবারিক পরিবেশে আছেন এবং রাজনীতির সঙ্গে তার আর কোনো সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই। তিনি এখন শারীরিকভাবে এতটাই দুর্বল যে নিজের চলাফেরাও করতে পারেন না। এমনকি নামাজ আদায় করাও তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। ফুসফুসে ক্যানসারের শেষ ধাপের কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছেন তিনি। ডাক্তাররা আগামী তিন মাস পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
২০১২ সালে স্পিকার থাকাকালেও আবদুল হামিদ সতর্ক করে বলেছিলেন, “সরকার যদি একনায়কতন্ত্রে পরিণত হয়, জনগণ সেটি মেনে নেবে না।” তার ভাষায়, তিনি রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নানা বিষয়ে মত দিতেন, যা অনেকে পছন্দ করতেন না।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা কারাগারে বা পলাতক। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে দলটি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে আবদুল হামিদের শেখ হাসিনার সঙ্গেও আর কোনো যোগাযোগ নেই, এমনকি দলের কারো সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন না বলে জানান নওশাদ খান।
আবদুল হামিদ দেশে ফিরে মানসিকভাবে স্বস্তি পাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তার শ্যালক। চিকিৎসকদের পরামর্শ সত্ত্বেও বিদেশে থেকে না থেকে দেশের মাটিতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তার ভাষায়, “যা হওয়ার দেশেই হোক, আমার মানুষজন এখানে।”
হাওড়ের সন্তান আবদুল হামিদ ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাতবারের সংসদ সদস্য, স্পিকার এবং এক দশকেরও বেশি সময় রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এখনো এলাকার মানুষের খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি, যদিও সেখানে যাওয়ার মতো শারীরিক সামর্থ্য আর তার নেই।