মোঃ তাজিদুল ইসলাম: সুনামগঞ্জের ছাতকে উপজেলা কৃষি অফিস প্রাঙ্গণ আজ এক ভিন্ন প্রাণচাঞ্চল্যে মুখরিত। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘সুস্বাস্থ্যের জন্য ফলিত পুষ্টি’ বিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মশালা, যেখানে অংশ নিচ্ছেন শিক্ষা, গণমাধ্যম, ধর্ম, স্থানীয় সরকার ও উন্নয়ন খাতের ৩০ জন প্রতিনিধির বহুমাত্রিক সমন্বয়—যা প্রশিক্ষণকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলেছে।
৯–১১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত চলমান এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো—গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মাঝে পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, সঠিক খাদ্যাভ্যাসের প্রচলন ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করা। প্রশিক্ষণে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, ইমাম, পুরোহিত, ইউপি সদস্য, মহিলা বিষয়ক মাঠকর্মী এবং এনজিও কর্মীরা অংশগ্রহণ করছেন, যা এই উদ্যোগকে এক অনন্য বহুপাক্ষিক জ্ঞান-বিনিময়ের মঞ্চে পরিণত করেছে।
সমৃদ্ধ এই কর্মশালায় প্রধান ট্রেইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সুনামগঞ্জের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ মুশফিকুছ সালেহীন। তিনি ফলিত পুষ্টির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা, খাদ্যের পুষ্টিমান সংরক্ষণ, কৃষিজ খাদ্যপণ্যের স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবহার এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক পুষ্টি সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়ে গভীর আলোচনা করছেন।
কর্মশালা প্রশিক্ষণ উদ্বোধন করেন ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌফিক হোসেন খান।
তিনি বলেন, সুস্থ জাতি গঠনে পুষ্টির গুরুত্ব অপরিসীম। মাঠপর্যায়ে যারা মানুষের সঙ্গে সরাসরি কাজ করেন, তাদের হাতে সঠিক জ্ঞান পৌঁছে গেলে পুরো সমাজেই ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।
তার উপস্থাপনা, অংশগ্রহণকারীদের আন্তঃক্রিয়ামূলক আলোচনায় কর্মশালার প্রতিটি সেশন আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করছে। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে আসছে। বারটান কর্তৃপক্ষ জানায়, পুষ্টি-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় এমন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুস্থ ও সবল রাখার ক্ষেত্রে সরাসরি ভূমিকা রাখে।
তিন দিনের এই আয়োজনে বিভিন্ন প্র্যাকটিক্যাল সেশন, গ্রুপ আলোচনা ও প্রয়োগিক ধারণার সমন্বয়ে অংশগ্রহণকারীরা মাঠপর্যায় কাজের জন্য নতুন দক্ষতা অর্জন করবেন। সমাপনী দিনে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হবে।
ছাতক উপজেলায় অনুষ্ঠিত এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা স্থানীয় উন্নয়ন, সচেতনতা এবং পুষ্টিনির্ভর স্বাস্থ্যগঠনে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে—এমনটাই প্রত্যাশা আয়োজকদের।



