স্টাফ রিপোর্টার: বহুল প্রত্যাশিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) এ আদেশ জারির পর সরকারি গেজেট প্রকাশিত হয়।
এই আদেশের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার সফল গণঅভ্যুত্থানের ফলস্বরূপ গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রণীত জুলাই সনদের প্রস্তাবনাগুলো আইনি কাঠামোর আওতায় বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
আদেশের মূল ভিত্তি গণভোট, যার মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। আদেশ অনুযায়ী, সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত অংশগুলো গণভোটে উপস্থাপন করা হবে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই এই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন কমিশনকে গণভোট আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গণভোটে ভোটাররা পাঁচটি সাংবিধানিক সংস্কার প্রস্তাবের প্রতি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন—
১️: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা: জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ায় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন।
২️: দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ: জাতীয় সংসদ দুই কক্ষ বিশিষ্ট হবে—নিম্নকক্ষের পাশাপাশি দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের একটি উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন প্রয়োজন হবে।
৩️: রাজনৈতিক ঐক্যমতের বাস্তবায়ন: নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং স্থানীয় সরকারসহ মোট ৩০টি ঐক্যমতের প্রস্তাব বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৪️: অন্যান্য সংস্কার: জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কারসমূহ রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হবে।
৫️: সময়সীমা ও কার্যকারিতা: পরিষদ প্রথম অধিবেশন শুরু থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে এবং পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো—গণভোটের ফলাফল যদি ইতিবাচক (হ্যাঁ সূচক) হয়, তবে গঠিত হবে ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’।
এই পরিষদে সদ্য নির্বাচিত জাতীয় সংসদের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পরিষদ প্রথম অধিবেশন থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই সনদ ও গণভোটের ফল অনুসারে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে। এরপর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
