জবি প্রতিনিধি: সম্পূরক বৃত্তি প্রদান এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের নীতিমালা অনুমোদন ও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের নবীন ও সাবেক শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে স্লোগান দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসনের উদাসীনতা এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে এই আন্দোলন নতুন করে দানা বেঁধেছে। গত মে মাসে আয়োজিত ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির মাধ্যমে সম্পূরক বৃত্তি চালুর আশ্বাস পেলেও আজ পর্যন্ত তার কোনো বাস্তবায়ন প্রশাসন করতে পারেনি।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা সম্পূরক বৃত্তির দাবি জানিয়ে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসায় তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি নিত্যদিনের খরচ চালাতে ভীষণ সংকটের মুখে পড়তে হয়। অথচ প্রশাসন এ বিষয়ে বারবার আশ্বাস দিলেও বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পাশাপাশি জকসু নির্বাচন নিয়ে নীতিমালা অনুমোদন এবং সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করায় শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব খান বলেন,“আমরা কোনো রাজনৈতিক স্বার্থে আন্দোলনে আসিনি। সম্পূরক বৃত্তি আমাদের ন্যায্য অধিকার, যা শিক্ষার্থীদের আর্থিক চাপ কমাবে। একইভাবে জকসু নির্বাচন আমাদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে। তাই আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নিক।”
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শফিক খান হাসিব বলেন,“জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুদীর্ঘ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও কৃতিত্বময় অনেক অর্জন রয়েছে। অথচ বছরের পর বছর এখানকার শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমাদের সিনিয়র ভাই-বোনেরা যমুনা অভিমুখে লং মার্চ করেছিলেন, তখন প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন হয়নি। আমাদের পরিবার থেকে পড়াশোনার খরচ চালানো খুব কঠিন। যদি সম্পূরক বৃত্তি চালু হয় তবে আমরা অন্তত কিছুটা স্বস্তি পাবো। পাশাপাশি জকসু থাকলে শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধানে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম পাওয়া যাবে। তাই আমরা আর প্রতিশ্রুতির ফাঁকা বুলি শুনতে চাই না, এখন চাই সুনির্দিষ্ট বাস্তব পদক্ষেপ।”
অবস্থান কর্মসূচির অন্যতম নেতৃত্বদানকারী জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“প্রশাসন যেন ঘুমিয়ে আছে। লং মার্চ টু যমুনায় দাবি আদায় করার পরও কেন তা বাস্তবায়িত হলো না? শিক্ষার্থীরা জানে না তারা কবে তাদের প্রাপ্য সম্পূরক বৃত্তি পাবে। আমরা চাই প্রশাসন স্পষ্টভাবে জানাক কবে থেকে বৃত্তি প্রদান শুরু হবে। একই সঙ্গে আমরা চাই দ্রুত জকসুর নীতিমালা অনুমোদন এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক। যদি আমাদের দাবি পূরণ না হয় তবে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।”
প্রসঙ্গত, কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে প্রশাসনের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানালেও এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।