মুসফিকুর রহমান, জবি প্রতিনিধি: “Where stories take flight” প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র উৎসব। সোমবার (১৯ মে) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাশ ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিক পোস্টার উন্মোচন ও তারিখ ঘোষণা করা হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের আয়োজনে আগামী ২৩, ২৪ ও ২৫ জুন, তিনদিনব্যাপী এই উৎসবটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও দুটি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবটি মূলত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রভিত্তিক, যেখানে ইতোমধ্যেই সারাদেশের শিক্ষার্থী ও উদীয়মান নির্মাতাদের অংশগ্রহণে ৫০টিরও অধিক চলচ্চিত্র জমা পড়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুজ্জামান রিক জানান, রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং বিচারকদের প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ৩৫টি চলচ্চিত্র চূড়ান্তভাবে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হবে। প্রতিযোগিতা বিভাগে থাকবে দুটি ক্যাটাগরি এবং দেওয়া হবে চারটি পুরস্কার। বিচারক হিসেবে থাকছেন দেশের খ্যাতিমান নির্মাতা ও চলচ্চিত্র সমালোচকগণ।
উৎসবের অংশ হিসেবে থাকছে ‘বিজ্ঞাপন চলচ্চিত্র নির্মাণ’ ও ‘চলচ্চিত্রের সফল প্রযোজনা’ বিষয়ে দুটি কর্মশালা, যা পরিচালনা করবেন দেশবরেণ্য নির্মাতা ও প্রযোজকরা। এছাড়া দুইদিনব্যাপী উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে দর্শকরা উপভোগ করতে পারবেন নির্বাচিত চলচ্চিত্রসমূহ।
উন্মোচিত উৎসবের পোস্টারটি তৈরি করেছেন চারুকলা অনুষদের ছাপচিত্র বিভাগের প্রভাষক রাসেল রানা, যেখানে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি উৎসবের চিত্র ফুটে উঠেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র সংসদের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, চলচ্চিত্রকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা। উৎসব কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সংসদের সভাপতি আদনান মাহমুদ সৈকত এবং উৎসব পরিচালক হিসেবে থাকছেন কোষাধ্যক্ষ রাগীব শাহরিয়ার সৈকত।
এ প্রসঙ্গে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহ নিশকাত জাহান কবির বলেন, “আমি শুনেছিলাম এমন কিছু হচ্ছে, তবে এটি যে এত সুন্দরভাবে আয়োজন করা হচ্ছে, সেটা জানতাম না। এখন আমি আমার শিক্ষার্থীদের নিয়ে গর্ব করতে পারি এবং তাদের কাজ নিয়ে লিখতেও পারি। আমি ফেইসবুকে আমার শিক্ষার্থীদের ভালো কাজ নিয়ে লিখি। উৎসবটি শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই সীমাবদ্ধ না থেকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও পৌঁছানো উচিত। শুধু ক্লাসরুম স্কোর দিয়েই মেধা যাচাই করা যায় না। একজন শিক্ষার্থী হয়তো ক্লাসে ভালো ফল করে না, কিন্তু দুর্দান্ত চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারে। তাকেও মেধাবী হিসেবে মূল্যায়ন করা উচিত।”
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক রিয়াজ উদ্দিন বলেন,“শুধু ফিল্ম বিভাগেই পড়তে হবে এমন নয়। যেসব শিক্ষার্থী অন্যান্য বিভাগে পড়াশোনা করে এবং ফিল্ম নিয়ে কাজ করার আগ্রহ রাখে, তারাও যেন এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে এবং আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারে, সেই লক্ষ্যেই চলচ্চিত্র সংসদটি গড়ে তোলা হয়েছে।”
চলচ্চিত্র সংসদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শীঘ্রই নির্মাতাদের আমন্ত্রণপত্র, কর্মশালার রেজিস্ট্রেশনসহ অন্যান্য কার্যক্রমের বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।