Shopping cart

Magazines cover a wide array subjects, including but not limited to fashion, lifestyle, health, politics, business, Entertainment, sports, science,

বজ্রপাতের ঝুঁকি নিয়েই হাওরে ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকরা

এপ্রিল ২৯, ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার: বৈশাখের শুরুতেই কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকায় বোরো ধান কাটা পুরোদমে চলছে। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে প্রকৃতির আরেকটি রূঢ় বাস্তবতা যেন তাদের পিছু ছাড়ছে না—বজ্রপাত। একের পর এক প্রাণহানির ঘটনায় কৃষকদের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) বজ্রপাতে কিশোরগঞ্জে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুইজন কৃষক, একজন নারী কৃষি শ্রমিক এবং একজন জেলে রয়েছেন। অষ্টগ্রাম ও মিঠামইন উপজেলার হাওর এলাকায় তিনজন প্রাণ হারিয়েছেন।

সকালে মিঠামইন উপজেলার শান্তিগঞ্জ হাওরে খড় শুকাতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান ফুলেছা বেগম (৬৫)। এর কিছুক্ষণ পর অষ্টগ্রামের হালালপুর ও কলমা হাওরে ধান কাটার সময় প্রাণ হারান ইন্দ্রজিত দাস (৩৬) এবং স্বাধীন মিয়া (১৪)। একই দিনে বাজিতপুর উপজেলার দৌলতপুর হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতের শিকার হন আব্দুল করিম (৩৭)। বিকেলে কটিয়াদী উপজেলার চাতল বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় মো. শাহজাহান (৪২) নামের এক জেলের।

ইটনা হাওরের কৃষক মুকুল মিয়া বলেন, “ভোর থেকে হাওরে কাজ করি। আকাশে মেঘ জমলেই আতঙ্কে থাকি—বজ্রপাত যদি হয়! আশপাশে আশ্রয় নেওয়ার মতো কোনো জায়গাও নেই।”

স্থানীয় আইনজীবী শেখ মো. রোকন রেজা জানান, হাওরের কৃষি শ্রমিকরা সারাদিন খোলা আকাশের নিচে কাজ করেন। হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হলে তারা নিরাপদ আশ্রয় পান না। ফলে জীবন ঝুঁকি নিয়ে মাঠেই কাজ চালিয়ে যেতে হয়।

অষ্টগ্রামের এক কৃষিশ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বজ্রপাতের ভয় থাকলেও কাজ করতে হয়। না করলে পেট চলবে না। সবই ভাগ্যের ওপর নির্ভর।”

অষ্টগ্রাম সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মতে, হাওর এলাকায় বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জরুরি ভিত্তিতে বজ্রনিরোধক ছাউনি স্থাপন প্রয়োজন।

আবহাওয়াবিদদের ব্যাখ্যায়, হাওর একটি খোলা জলাভূমি অঞ্চল হওয়ায় এখানে বজ্রপাত বেশি হয়।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. বদরুদ্দোজা জানান, বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনায় সরকারিভাবে ২৫ হাজার টাকা দাফন ও কাফনের অনুদান দেওয়া হয়। তবে বজ্রপাত প্রতিরোধে কোনো প্রকল্প বর্তমানে নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *