আনোয়ার হোসাইন দিরাই (সুনামগঞ্জ))প্রতিনিধি: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল দিরাই উপজেলা ও পৌর শাখার কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, দিরাই-শাল্লার সাবেক এমপি, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়খ নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, আজকে বক্তব্য দেওয়ার সময় নয় আজকে কর্মীদের কথা শুনার দিন। কর্মীরাই হচ্ছে একটি দলের প্রাণ, কর্মীরাই সিদ্ধান্ত নেবে আগামীতে কে নেতা হবে। তিনি বলেন, আমি মনে করি দিরাই-শাল্লার মানুষের ভালবাসাই আমার সুস্থতা। আজকে এখানে এসে আমার প্রতি তাদের যে ভালবাসা দেখলাম এটার প্রতিদান দেওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। দোয়া করি সবাই যেন ভাল থাকেন।
বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনের সভাপতিত্বে ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাদারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুল এর সঞ্চালনায় শনিবার দিরাইয়ে আজমল কনভেনশন সেন্টারে এ কমী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক বিচারপতি, দিরিাই-শাল্লার সাবেক এমপি মিফতা উদ্দিন চৌধুরী রুমি বলেন, আমাদের আরো সুশৃঙ্কল হতে হবে। কর্মীসভায় পুলিশ আসবে, সেনাবাহিনী আসবে এটা আমি কল্পনা করিনি। আমাকে নিমন্ত্রণ দেওয়া হয়েছে এ সভায় আসার জানতাম যদি এমন হবে তাহলে আসতাম না।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট আমরা বিজয় চিনিয়ে এনেছি তবে বিজয় এখনও নিশ্চিত হয়নি। স্বড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয়, তাদের প্রতিহত না করলে বিজয় আনন্দের হবে না। শেখ হাসিনা পালিয়েছেন কিন্তু তার দুষররা এখনও দেশে রয়েছে। বাংলাদেশের বিচার ব্যাবস্থা প্রশাসন, পুলিশ প্রশ্নের সম্মুখিন। এসব জায়গায় আমাদের কাজ করতে হবে।
তিনি সমসাময়িক প্রসঙ্গে টেনে বলেন, ভারতে মসজিদ ভাঙ্গলে ওরা বলেনা সেখানে সাম্প্রদায়িকতা আছে কিন্তু আমাদের দেশে ইসকনের একজন বহিস্কৃত নেতাকে গ্রেফতার করার পর তারা আমাদের দেশে চট্টগ্রাম দখল করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। মনে রাখবেন এটা শেখ হাসিনার দেশ নয় এটা বাংলাদেশ। শহীদ জিয়ার ঘেষণার মধ্য দিয়ে যে দেশ স্বাধীন হয়েছে সে দেশের স্বাধীনতা আমরা রক্ষা করবো।
দিরাই-শাল্লার মানুষের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের চোখ কান খোলা রাখতে হবে। ভারতের স্বড়ন্ত্রের লক্ষ্য একটাই বাংলাদেশে তাদের একমাত্র বন্ধু শেখ হাসিনা। তারা শেখ হাসনিাকে দেশে ফিরিরে আনার জন্য বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করছে। আমরা তাদের ফাঁদে পা দেব না। দিরাই-শাল্লা তে যে কোন সময় সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি হতে পারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। দিরাই-শাল্লায় যে হিন্দু ভাইয়েরা আছেন তাদের বলবো এ দেশ আপনার আমার সবার, আমরা একসাথে খেলেছি বড় হয়েছি আমরা সেভাবেই থাকতে চাই। আমরা প্রেমডোরে বাঁধাথাকতে চাই। কোন সাম্প্রদায়িক উস্কানি হবে না।
নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এত আনন্দিত হবে না, শ্রীলংকার কথা মনে রাখবেন। আমরা যাতে সে অবস্থায় পরতে না হয় সেজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। আমাদের কোন আচরণে মানুষ যাতে না বলে আগেই ভাল ছিলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমাদের দাবী হচ্ছে শেখ হাসিনাকে দেশে এনে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে হবে। তার শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সভার শুরুতে উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন বিএনপির নেতা এবং দিরাই পৌর সভার ৯ টি ওয়ার্ড বিএনপির নেতাদের বক্তব্য শোনা হয়। তারা দাবী করেন, গক ১৫ বছর যরা দলের সাথে ছিল তাদের নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। যারা জেল জুলুমের স্বীকার হয়েছেন তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। এখন দলে নেতার অভাব নেই। তারা ইস্ত্রী করা পাঞ্জাবি পরে টাকার ভান্ডিল নিয়ে রাজনীতিতে নামছেন। এদের কে দলের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে যাতে না রাখা হয় সে বিষয়ে তারা জেলা নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট মল্লিক মঈন উদ্দিন সোহেল, এডভোকেট শেরেনুর আলী, নাদির আহমদ, এডভোকেট মাসুক আলম, এডভোকেট আবুল মজাদ, আতম সালেহ, নজরুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুর রশিদ চৌধুরী রেজাউল হক, আনছার উদ্দিন, জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আমিনুর রশিদ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ইকবাল হোসেন, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ।
সভাপতির বক্তব্যে কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন কমিটির গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন যিনি উপজেলা বিএনপিতে এক জন আহ্বায়ক ও দুই জন যুগ্ম আহ্বায়ক থাকবেন। আহ্বায়খ ও প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক এর স্বাক্ষরে ইউনিয়ন কমিটির অনুমোদন হবে। যিনি আহ্বায়খ হবেন তিনি পরবর্তেীতে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে পারবেন না। আগামী ৮-৯ ডিসেম্বর আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক পদে জেলা বিএনপির অফিস থেকে আবেদন পত্র স্যগ্রহ করতে হবে ১১ ডিসেম্বর তা জমা দিতে হবে।