স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের আগে থেকেই উত্তেজনা বাড়ছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ফল ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে প্রার্থীদের অভিযোগ–পাল্টা অভিযোগে পরিস্থিতি গরম হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এ প্রেক্ষাপটে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করে বলেন, “ডাকসু নির্বাচনে যারা জিতবে, তারা দায়িত্ব কিভাবে নেবে আর যারা হারবে, তারা পরাজয় কিভাবে মেনে নেবে—এই বিষয়গুলোই বলে দেবে আমাদের জাতীয় রাজনীতি ও গণতন্ত্র কোন দিকে যাচ্ছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সরাসরি ও পরোক্ষ প্রভাব অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পেশিশক্তি ও সংগঠিত উপস্থিতির মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার ছাত্ররাজনীতির মৌলিক চরিত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তার মতে, ডাকসু এখন শুধু ছাত্রদের রায় নয়, বরং জাতীয় রাজনীতির প্রতিফলন হয়ে উঠেছে, যা ভবিষ্যতের জন্য নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।
হাসনাত আরও বলেন, প্রতিপক্ষকে গণহারে ‘ট্যাগিং’ করার সংস্কৃতি শেখ হাসিনার আমল থেকে চালু থাকা বিভাজন ও দমননীতির ধারাবাহিকতা। এ ধারা দীর্ঘমেয়াদে রাজনীতিকে অরক্ষিত করে তুলবে বলে তিনি সতর্ক করেন।
ছাত্র রাজনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হলে নিয়মিত নতুন নেতৃত্ব গড়ে ওঠা জরুরি বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ডাকসু নির্বাচন সেই সংস্কৃতি গড়ার সুযোগ হতে পারত। কিন্তু এখনো ফলাফল গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো শক্তি প্রদর্শনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা শিক্ষাঙ্গনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি।”
সব পক্ষকে ভোটারদের রায় মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত লিখেছেন, “গণতন্ত্র মানে সবসময় জেতা নয়। যাকে আমি অপছন্দ করি, তাকেও যদি জনগণ বেছে নেয়, সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান করাটাই গণতন্ত্র।”
তিনি আরও বলেন, “স্বল্পমেয়াদি স্বার্থে গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ফল আমরা গত ১৭ বছরে দেখেছি। এখন সময় এসেছে জনগণের সিদ্ধান্তকে সর্বাগ্রে রাখার। নইলে ভবিষ্যতের রাজনীতি বন্দী হয়ে পড়বে কেবল জয়ীদের উল্লাস আর পরাজিতদের ক্ষোভে।”