যুক্তরাজ্য সংবাদদাতা: যুক্তরাজ্যে জুলাই বিপ্লবে ভূমিকা পালনকারী সংগঠনগুলোর সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগষ্টের বিপ্লবকে সমুন্নত রেখে, শহীদ-আহতদের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে গতকাল ২৪শে ফেব্রুয়ারি, পূর্ব লন্ডনের একটি হলরুমে ‘জাস্টিস ফর জুলাই ইউকে’ এর উদ্যোগে “৩৬ জুলাইয়ের যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিপ্লবীদের সম্মাননা প্রদান ও প্রত্যাশার বাংলাদেশ শীর্ষক” আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করেছে। ছাত্রদের অসীম সাহসী সিদ্ধান্তের ফলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের হাতে ও তাদের মাধ্যমে বিজয় দিয়েছেন। এটি কোন একক গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলের বিপ্লব নয়। এই বিপ্লবে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশীরা অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে অবশ্যই বিভিন্ন উপায়ে পাইওনিয়ারের ভূমিকায় ছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রবাসীরা। তাদের ভুমিকা ছিল অনন্য। তিনি এই রকম সম্মাননা অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ভবিষ্যতে আরো বড় আকারের আয়োজন করে বিপ্লবীদেরকে আরও সম্মানিত ও উজ্জীবিত করতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা জনাব মোহাম্মদ আমিন উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সেক্রেটারি এমসি কলেজ সিলেটের সাবেক ছাত্রনেতা আবু তালহা এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ইসলামিক চিন্তাবিদ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ইমাম আজমল মসরুর, টাওয়ার হেমলেটস কাউন্সিলের স্পিকার ব্যারিস্টার সাইফুদ্দিন খালেদ, কমিউনিটি নেতা ও মানবাধিকার সংগঠক মাহফুজ নাহিদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, সিলেট মহানগর জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম শাহীন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কমিউনিটি এক্টিভিস্ট আব্দুল মুনিম জাহেদী কেরল, ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী ছাত্রনেতা ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী ছাত্রনেতা ব্যারিস্টার বদরে আলম দিদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী ছাত্রনেতা ও ‘বাংলাদেশ সলিডারিটি ক্যাম্পেইনের’ অন্যতম উদ্যোক্তা আবু সালেহ ইয়াহইয়া, ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটস এর উপদেষ্টা আব্দুল আলী, চট্টগ্রাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী ছাত্রনেতা ও সামুদা মুসলিম কমিউনিটি সেন্টারের খতিব মঞ্জুর আহমেদ, আর্কিটেক্ট মুর্শেদ আহমদসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দও বক্তব্য প্রদান করেন।
এছাড়াও অন্যান্য অতিথিবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সিলেট মহানগরীর সাবেক সভাপতি আব্দুল করিম জলিল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সিলেট মহানগরীর সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম শিপার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ, সিলেট জেলা পশ্চিমের সাবেক সভাপতি জুবের আহমদ আহাদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির ইন্টারন্যাশনাল ডায়াসপোরা মেম্বার ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, কাউন্সিলর কবির হুসাইন, বিশিষ্ট সাংবাদিক হাসনাত চৌধুরী, রাইটস অব দ্যা পিউপুল এর উপদেষ্টা সোয়াইবুর রহমান লায়েক, ডাক্তার আলবাব চৌধুরী, ডাক্তার জায়েদ হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ব্রাইট ফিউচার কর্পোরেশন এর CEO মোহাম্মেদ আব্দুল মুহিত, ফ্রিম্যন অব দ্যা সিটি খেতাবপ্রাপ্ত কমিউনিটি এক্টিভিস্ট মুহি মিকদাদ, ইসলাম চ্যানেল বাংলার হেড অব প্রোডাকশন তাওহীদুল কারীম মুজাহিদ ও আরো বিশিষ্টজন।
অনুষ্ঠানে ভিডিও ডকুমেন্টারি “৩৬ জুলাইঃ বিপ্লবের ঢেউ দেশ থেকে বিশ্বমঞ্চে” প্রদর্শন করা হয়। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানান, তারা এই ডকুমেন্টারি অফিসিয়ালি তাদের অফিসিয়াল পেইজ ও ওয়েবসাইটে শীগ্রই প্রকাশ করবেন। ডকুমেন্টারি প্রদর্শনীর সময় প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিবৃন্দসহ উপস্থিত সকলে গভীর আবেগের সাথে পুরো ডকুমেন্টারিটি দেখেন। ডকুমেন্টারিতে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ২০২৫ এর ৫ই আগষ্টের বিপ্লব পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের সকল অপকর্ম ও এর বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিবাদ তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে আগত সম্মানিত অতিথিবৃন্দ ও সকল অংশগ্রহনকারীর কাছে একটি পেপার ডকুমেন্টের মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে উনাদের প্রত্যাশার কথা ৫ টি পয়েন্টে (অর্থনীতি, রাজনীতি, ধর্মনীতি, স্বাস্থ্যখাত, প্রবাসী অধিকার) নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। সকলেই খুবই আগ্রহ সহকারে ব্যক্তিগত মতামত লিখে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শেষে প্রধান অতিথির কাছ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করেন সংবর্ধিত মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা।