দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ): সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরে বাজারের ঠিক পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুরমা নদী। বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলে নদীটিকে ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছে। এতে দিন দিন নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে আশপাশের মানুষজন।
নদীদূষণের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন নাগরিকেরা। তাঁদের দাবি, এ অবস্থার কারণে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ক্রেতা, স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এ ছাড়া পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নদী রক্ষায় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
শনিবার ১৩ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে দেখা যায়, দোয়ারা বাজারের উত্তরে দোয়ারা-শরিফপুর সড়কের সেতুর দু’পাশে ময়লা-আবর্জনা বিশাল স্ত্তপ। দুর্গন্ধে সেখানে দাঁড়ানোও কষ্টকর। বাজারের কয়েক’শ দোকান, শতাধিক বসতবাড়ি ও একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা নিয়মিতভাবে নদীতে ফেলা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দোয়ারাবাজার এলাকার এক বাসিন্দা নয়া দিগন্তকে বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে দিনরাত যে যেভাবে পারছেন নদীর ব্রিজের দু-পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন। বিশেষ করে বাজারের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী, মুরগি, মাছ, মাংস ও তরকারি ব্যবসায়ীরা ময়লা বস্তায় ভরে নদীতে ফেলছেন। যখন পানি বেশি থাকে, তখন এসব ময়লা স্রোতে ভেসে যায়। পানি কম থাকলে বড় স্তুপ দেখা যায়। এতে দূর্গন্ধে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসী ও পথচারীদের। এসব দেখার যেন কেউ নেই।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী জানান, নদীর পাড় ঘেঁষে কয়েকটি বসতঘর আছে। এসব বাসিন্দারাও ময়লার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ। এ ছাড়া নদী–সংলগ্ন মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়ে দুর্গন্ধে দুর্ভোগ পোহান মুসল্লিরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল আউয়াল নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে নদীর পাড়ে ময়লা ফেলছেন। কারণ, বাজারের ময়লা ফেলার জন্য কোনো জায়গার ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দোয়ারাবাজার উপজেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন বলেন, নদীদূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের। বিষয়টি আগামী সভায় তোলা হবে।
নদীদূষণ ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুপ রতন সিংহ । বাজারের ময়লা অবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট একটা জায়গার ব্যবস্থা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন,দোয়ারাবাজারে নিয়মিত সক্রিয় কমিটি না থাকায় এমনটা হচ্ছে। বাজারে একটা কমিটি হওয়া প্রয়োজন।