Shopping cart

মাধবপুরে প্রতারণার মামলায় নিশানের নির্বাহী পরিচালক বেলালসহ গ্রেপ্তার-২

সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫

মাধবপুরে প্রতারণার মামলায় নিশানের নির্বাহী পরিচালক বেলালসহ গ্রেপ্তার-২

মাধবপুরে প্রতারণার মামলায় নিশানের নির্বাহী পরিচালক বেলালসহ গ্রেপ্তার-২

শেখ জাহান রনি, মাধবপুর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের মাধবপুর প্রতারণার অভিযোগে নিশান পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সোসাইটি নামে একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক মঈন উদ্দিন বেলাল ও কর্মকর্তা গোবিন্দ কৈরিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার বেলা ৩ টায় উপজেলার তেলিয়াপাড়া নিশান সোসাইটি অফিস থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায় , উপজেলার তেলিয়াপাড়া গ্রামের স্বপ্না রানী রায় এর দায়ের করা একটি প্রতারণার মামলায় মইনউদ্দিন বেলাল, গোবিন্দ কৈরি সহ কয়েকজন এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে সোমবার বিকেলে মাধবপুর থানার এসআই নাজমুল হাসান এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তেলিয়াপাড়ায় অবস্থিত নিশান এর প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেন।

জানা যায় ২০ বছর আগে মঈন উদ্দিন বেলাল ব্র্যাক এনজিও থেকে চাকরি ছেড়ে তেলিয়াপাড়ায় নিশান স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সোসাইটির নাম দিয়ে শ্বশুরের জাযগায় অফিস খুলে বসে। নিযুক্ত করা হয় কিছু কর্মী। কর্মীরা চা বাগান সহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে প্রচার করে নিশানে টাকা জমা রাখলে প্রতি লাখে মাসে ২ হাজার টাকা মুনাফা দেওয়া হয়। এই মুনাফার কথা শুনে হবিগঞ্জের চা বাগানের লোকজন সহ এলাকার প্রায় ৪ হাজার মানুষ বেলাল,তার ছেলে সায়েম,সালমান,শ্যালক জালাল,মাসুদ, স্ত্রী আমেনার কাছে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা জমা করেন।শুরুতে কয়েক বছর আমানতকারিদের মাসে লাখে ২ হাজার টাকা করে মুনাফা ঠিকমত দিয়ে আসছিলেন। যেখানে ব্যাংকে জমা রাখলে মাস শেষে প্রতি লাখে ৮ শ টাকা দেওয়া হয়।সেখানে নিশানে ২ হাজার টাকা এই খবর চারিদিককে ছড়িয়ে পড়লে সরকারি বেসরকারি চাকরিজীবীরা গোপনে সবাই নিশানে টাকা জমা করেন।

কিন্তু গত তিন বছর ধরে আমানতকারিদের আসল টাকা ও মুনাফা ফেরত চাইলে বিপত্তি দেখা দেয়। নিশান টাকা ফেরত দেওয়া বন্ধ করে দেয়।এ নিয়ে গত এক বছর ধরে টাকা হারিয়ে নিস্বঃ গ্রাহকরা বিচলিত হয়ে পড়েন।অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ গরুছাগল ও জমি বিক্রী করে নিশানে টাকা জমা করেছিলেন।একপর্যায়ে গ্রাহকরা চাপ সৃষ্টি করলে নিশানের পরিচালক সায়েম ও সালমান গোপনে পালিয়ে যায়।

পরে গ্রাহকরা নিশানের নির্বাহী পরিচালক বেলাল ও তার স্ত্রী আমেনাকে তেলিয়াপাড়া নিশান কার্যালয়ে নজরবন্দি করে রাখে। আমেনা মাস খানেক আগে গোপনে পালিয়ে গেছে।নিশানের এমডি জালাল উদ্দিন একাধিকবার সভা করে সবাইকে আশ্বাস দিয়েছিল টাকা ফেরত দেবে। অবশেষে জালালও আত্বগোপনে চলে গেছেন।

গোয়াছনগর গ্রামের সাইফুল নামে একজন গ্রাহক জানান,কোম্পানিতে জমি বিক্রি করে লাভের আশায় নিশানে টাকা জমা করেছিলাম কিন্তু টাকা মেরে তারা সবাই পালিয়ে গেছে।

সুরমা গ্রামের মানিক মিয়া জানান,তার পিতা আরজু মিয়া নিশানে টাকা জমা রেখে ফেরত চাইতে গিয়ে তাকে টাকা ফেরত দেয়নি। সেই কষ্টে তার পিতা হঠাৎ মারাই গেছেন।

পরমানন্দপুর গ্রামের রফিক জানান, কৃষিকাজ করে কষ্টার্জিত অর্থ জমা তিনি রেখেছিলেন।কিন্তু টাকা মেরে তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করেছে। ।নিরীহ মানুষ পড়েছে বিপদে।তাই সরকারের প্রতি আমাদের দাবি তাদের সম্পত্তি সরকারের আওতায় নিয়ে সাধারণ মানুষের টাকা যেন ফেরত দেন।

মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,নিশানের মঈন উদ্দিন বেলাল ও গোবিন্দের নামে প্রতারণা ও টাকা আত্বসাতের মামলায় আদালতের গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *