জবি সংবাদদাতা: ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। স্কুল থেকে কলেজ, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া প্রতিষ্ঠানটি সফলতার ২০ বছর পেরিয়ে ২১ বছরে পদার্পণ করেছে৷ আনন্দ র্যালি, চারুকলা প্রদর্শনী, মেলা, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল সহ বিভিন্ন আয়োজনে পালিত হয়েছে দিবসটি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের শুভ উদ্বোধন করা হয়। পরে উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ রেজাউল করিম বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
প্রতিবছর ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হলেও এবার কালীপূজা বা শ্যামাপূজার ছুটি উপলক্ষে তা পিছিয়ে ২৭ অক্টোবরে উদ্যাপন করা হবে। ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য হলো ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান, স্বপ্নে জয়ে অটল প্রাণ’।
উদ্বোধনের পর উপাচার্যের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড় ও ভিক্টোরিয়া পার্ক পরিক্রম করে পুনরায় ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়।
এরপর সকাল সাড়ে দশটায় শহিদ সাজিদ ভবনের নিচতলায় চারুকলা অনুষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘বার্ষিক শিল্পকর্ম ২০২৫’ শীর্ষক চারুকলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এতে চারুকলা অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিল্পকর্ম, চিত্র এবং আলোকচিত্র প্রদর্শিত হয়, যা উপস্থিতদের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
দুপুর বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবন প্রাঙ্গণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মোশাররাফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিনের সঞ্চালনায় একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, গত এক বছরে দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা শিক্ষা ও গবেষণামূলক কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করতে পেরেছি। আমাদের অর্জন সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাই ভালোভাবে অবগত। আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বাজেট ছিল অত্যন্ত সীমিত; বর্তমানে সেই বাজেট উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গবেষণা সপ্তাহ’ আয়োজন করা হবে, যা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়ের জন্য গবেষণায় উৎসাহ জোগাবে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন সময়সাপেক্ষ হলেও আমরা এই সমস্যার সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করছি; আশা করছি আগামী বছরের মধ্যে আংশিক সমাধান সম্ভব হবে।
এসময় ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করে যাবো—এই প্রত্যাশাই আজকের দিনে আমাদের সবার অঙ্গীকার হওয়া উচিত। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে ইতোমধ্যে আংশিক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, এবং আরও বিস্তৃত সমাধানের জন্য কাজ চলছে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা, নিষ্ঠা ও সহযোগিতাই জবিকে আরও সমৃদ্ধ, আধুনিক ও গৌরবময় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে।
এসময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, বিভিন্ন অনুষদ, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রভোস্ট, প্রক্টর, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।



