Shopping cart

Magazines cover a wide array subjects, including but not limited to fashion, lifestyle, health, politics, business, Entertainment, sports, science,

পাহাড়ে প্রোপাগান্ডার খেলায় কারা?

এপ্রিল ১৫, ২০২৫

পয়লা বৈশাখ—বাঙালির প্রাণের উৎসব। কিন্তু এই উৎসবেও পার্বত্য চট্টগ্রামে দেখা গেল এক পুরনো কৌশলের নতুন রূপ। কিছু বামপন্থী উগ্রবাদী এবং উপজাতীয় জাতিবাদী গোষ্ঠী রঙিন প্ল্যাকার্ড হাতে হাজির হয়ে পাহাড়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতির বিরুদ্ধে স্লোগান তুলল। কোথাও লেখা ‘পাহাড়ে সেনা শাসন বন্ধ কর’, কোথাও ‘আদিবাসী স্বীকৃতি দাও’, আবার কোথাও তুলনা টানা হলো ফিলিস্তিনের সঙ্গে। এসব দেখে প্রশ্ন জাগে—কাদের স্বার্থে এই প্রচারণা?

পাহাড়ের বাস্তবতা ভিন্ন। এখানে অস্ত্রধারী উপজাতীয় চাঁদাবাজ গোষ্ঠীগুলোর দৌরাত্ম্য এতটাই প্রবল যে একজন কৃষক যদি এক ছড়ি কলা বিক্রি করেন, তাও তাকে চাঁদা দিতে হয়। ১ কেজি হলুদ বা সবজি বিক্রির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। সন্তানদের বিয়েতে, বাড়িঘর নির্মাণে, এমনকি বাড়ির রান্নার জন্যও স্থানীয়দের জিম্মি করা হয় নিয়ম করে। বছরের পর বছর ধরে এই অঞ্চলে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি চলে আসছে, যার মূল শিকার সাধারণ পাহাড়িরা।

এই বাস্তবতায় পাহাড়ে সেনাবাহিনী শুধু রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের প্রতীক নয়, বরং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার শেষ আশ্রয়স্থল। অথচ কিছু তথাকথিত ‘পাহাড়বান্ধব’ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এই বাহিনীর বিরুদ্ধেই জনমত তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা পাহাড়ের মানুষকে উন্নয়ন ও নিরাপত্তা থেকে দূরে সরিয়ে রেখে নিজেরা রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়।

সেনাবাহিনীর অনুপস্থিতি মানেই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একচেটিয়া দখলদারিত্ব। যারা ‘অধিকার’ আর ‘আত্মনিয়ন্ত্রণ’ শব্দের আড়ালে লুকিয়ে পড়ে, তাদের উদ্দেশ্য কখনো সাধারণ মানুষের মঙ্গল নয়—তারা চায় অস্ত্রের শাসন। তাদের দাবি আদতে পাহাড়কে রাষ্ট্রের হাত থেকে আলাদা করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ।

সাধারণ পাহাড়িরা এসব চায় না। তারা চায় শান্তি, উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও সম্মানজনক জীবন। তারা চায় পাহাড়ে রাস্তাঘাট, স্কুল-হাসপাতাল, কর্মসংস্থান। তারা চায় সন্তান যেন স্কুলে যেতে পারে, বাজারে গিয়ে যেন ভয়হীনভাবে পণ্য বিক্রি করতে পারে।

এই প্রোপাগান্ডা বন্ধ হওয়া দরকার। পাহাড় বাংলাদেশের অংশ, এবং পাহাড়বাসীও বাংলাদেশের নাগরিক। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আর যারা এই বাস্তবতা আড়াল করে সস্তা স্লোগানে বিভ্রান্তি ছড়ায়, তাদের মুখোশ টেনে খুলে দেওয়া এখন সময়ের দাবি।

লেখক: হাবিব আল মাহমুদ

কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক- পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি), বান্দরবান পার্বত্য জেলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *