মাহফুজ কাউসার ছাদি: সিলেটে পরিবহন ব্যবস্থা অচল হওয়ার মুখে হঠাৎ করেই প্রত্যাহার করা হয়েছে বাস-ট্রাক থেকে শুরু করে সিএনজি-অটোরিকশা পর্যন্ত সব যানবাহনের কর্মবিরতি। রোববার (৬ জুলাই) ‘সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস, ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, সিএনজি, ইজিবাইক-লেগুনা ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’ এর পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) থেকে পাঁচ দফা দাবি আদায়ে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। ওইদিনই সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে কর্মবিরতির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছিলেন।
কিন্তু ধর্মঘট শুরুর কিছু সময় পরেই হঠাৎ করেই এই ধর্মঘট সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা আসে ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে। এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ ও যাত্রীরা বিস্মিত এবং উদ্বিগ্ন। রাস্তায় পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক হলেও মানুষের মনে জেগেছে তীব্র সংশয় ও নানা প্রশ্ন।
সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি হলো: পাঁচ দফা দাবির কোনোটিই আদায় না হওয়া সত্ত্বেই কেন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলো? ধর্মঘট ঘোষণার পর প্রশাসনের সঙ্গে কোনো আলোচনা বা সমঝোতার খবর সাধারণ মানুষের কাছে না পৌঁছালে এই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে তারা সন্দিহান। অনেকেই সরাসরি প্রশ্ন তুলছেন, আসলেই কি এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল শ্রমিক-মালিকদের প্রকৃত দাবি আদায়ের জন্য, নাকি কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তির ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে?
এই হঠাৎ ধর্মঘট প্রত্যাহারকে অনেকে অস্বচ্ছ ও বিভ্রান্তিকর বলে মনে করছেন। যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, ভবিষ্যতে পরিবহন খাতের যে কোনো দাবি-দাওয়া আদায়ের আন্দোলন এবং ধর্মঘটের ডাকের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ঐক্য পরিষদের নেতাদের কাছ থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের পেছনে স্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা এবং পাঁচ দফা দাবির ভবিষ্যৎ পরিণতি সম্পর্কে জবাবদিহিতা দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। আপাতত রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও, সিলেটবাসীর মনে দোলাচল ও অস্পষ্টতা থেকেই যাচ্ছে।