Shopping cart

  • Home
  • বাংলাদেশ
  • দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে রাঙ্গামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ

দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে রাঙ্গামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ

জুন ৩০, ২০২৫

দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে রাঙ্গামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ

দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে রাঙ্গামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ

আহমদ বিলাল খান: পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমাকে আওয়ামী লীগের দোসর উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, খাদ্যশস্য ও অর্থ বিতরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে রাঙ্গামাটিতে মানববন্ধন ও বিক্ষুভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি। তার পদত্যাগের জন্য সাত দিনের সময় নির্ধারণ করে পিসিসিপি। অন্যথায় হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

সোমবার (৩০ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় শহরে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার উদ্যােগে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী রাষ্ট্রীয় নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে জন্য আমরা অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই।

বিক্ষোভ সমাবেশে পিসিসিপি রাঙামাটি জেলার সভাপতি মো. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান এর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি’র রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. সোলায়মান, পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার যুগ্ন সম্পাদক রবিউল ইসলাম, বরকল উপজেলা সভাপতি তসলিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা প্রচার সম্পাদক ইসমাঈল গাজী, লংগদু উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ হোসেন, পিসিসিপি পৌর সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।

সমাবেশে পিসিসিপি নেতৃবৃন্দ বলেন, ২৩ জুন অনুষ্ঠিত ঐ সভায় ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০’ সংশোধনের লক্ষ্যে ‘নৃ-বৈচিত্র্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অধ্যাদেশ, ২০২৫ (প্রস্তাবিত)’ বিষয়ে আলোচনা হয় এবং সাতটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ‘জাতি-বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট’ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “আমরা আদিবাসী শব্দটি চাচ্ছি শুধু আমাদের আইডেন্টিফিকেশনের জন্য।

তার এই বক্তব্য দ্ব্যর্থবোধক এবং সংবিধানবিরোধী অবস্থানকে উসকে দেয়। বাংলাদেশের সংবিধানের ৬(২) অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে: “রাষ্ট্রের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিক হইবে।” একটি দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি কর্তৃক এমন বক্তব্য প্রদান শুধু অনভিপ্রেতই নয়, বরং তা জাতিগত উত্তেজনা এবং বিভাজনের রাজনীতিকে উৎসাহিত করতে পারে।

বাংলাদেশ একটি একক ও অভিন্ন জাতিসত্তাভিত্তিক রাষ্ট্র। বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকারকে সরকার দীর্ঘদিন ধরে সম্মান জানিয়ে আসছে। কিন্তু এই অধিকার চর্চা যদি একক জাতিসত্তার বিপরীতে সংবিধানবিরোধী রাজনৈতিক দাবিতে রূপ নেয়, তাহলে তা ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।

আমরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন যে, সভায় ৭(ঘ) ধারা সংশোধনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত ৬ জন প্রতিনিধির প্রস্তাব সংসদীয় প্রতিনিধিত্বের কাঠামোতে একপাক্ষিকতা তৈরি করতে পারে। এতে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্ব সংকুচিত হবে এবং দীর্ঘদিনের সহাবস্থানের চর্চা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

সমাবেশে চারটি দাবি জানায় পিসিসিপি

১. সংবিধানবিরোধী ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার ও প্রচার বন্ধে সুস্পষ্ট রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।

২. কোনো ব্যক্তি যদি দায়িত্বে থেকেই রাষ্ট্রীয় নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, তার বিরুদ্ধে যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকার সংরক্ষণ হোক সংবিধানিক কাঠামোর ভেতরে—সাংগঠনিক আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে নয়।

৪. পার্বত্য অঞ্চলে বাঙালি ও অন্যান্যের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহাবস্থান ও সমবিকাশ নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

সমাবেশে পিসিসিপি নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এর আগে বিভিন্ন বরাদ্দে অনিয়ম ও সাম্প্রদায়িকতা করেছেন, তাই সুপ্রদীপ চাকমাকে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে আহব্বান জানাচ্ছে পিসিসিপি। পাহাড়ে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখতে হলে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া বন্ধ করতে হবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার। তারা যদি বিতর্কিত কোন সিদ্ধান্ত নেয় পাহাড়ের বিষয়ে তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) দেশ প্রেমিক ছাত্র-জনতাকে নিয়ে দুর্বার গণ আন্দোলন গড়ে তুলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *