সোহেল মিয়া, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ): ক্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুনামগঞ্জ -৫ (ছাতক-দোয়ারা) আসনে নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
দীর্ঘদিন ভোটাধিকারবঞ্চিত এই আসনের সাধারণ মানুষের মধ্যেও যেন এমন আকাঙ্ক্ষা বিরাজ করছে। এ আসনটি জেলার অপর পাঁচটির চেয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এ আসনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রভাব পড়ে অপরগুলোয়। আসনটিতে বিএনপির দু’জন মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী নানাভাবে ভোটারদের কাছাকাছি যাচ্ছেন। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা।
জানা যায়, এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১২ হাজার ৪৯৯ জন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৭০৩ জন পুরুষ, ২ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪১ জন নারী ভোটার রয়েছেন।
ছাতক-দোয়ারা দুই উপজেলার ২২ ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত জেলার গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে ১৯৯১ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি হতে এমপি নির্বাচিত হন আব্দুল মজিদ মাষ্টার, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, ১৯৯৬ স্বতন্ত্র, ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়ন নিয়ে তৃতীয় বার সাংসদ নির্বাচিত (১৫ ফেব্রুয়ারি-১২ জুন) তিনি,পরে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৯৬ সালে ১২ জুন আওয়ামীলীগের প্রার্থী মুহিবুর রহমান মানিক প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন,এর পর ২০০৮.২০১৪.২০১৮, ২০২৪ সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।
আসনটিতে আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক,জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন , বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন তিনি।
এই আসনটিতে এবার শক্তভাবে থাবা দিতে মাঠে সক্রিয় জামায়াত। ৫ আগস্টের পর সাংগঠনিক কর্মসূচি ব্যাপকভাবে জোরদার করেছে দলটি। ইতোমধ্যে সব ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠনসহ সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছে। জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন গোবিন্দনগর ফজলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুস সালাম আল মাদানী।
১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ঐক্য জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন তিনি।
বিএনপি, জামায়াত ছাড়াও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের (মামুনুল হক) সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ করছেন খেলাফত শ্রমিক মজলিশের উচ্চতর পরিষদের সদস্য মাওলানা সাদিক সালিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ করছেন দলটির সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সংখ্যালঘুবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা হাবিবুল্লাহ আশরাফী। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছেন ছাতক জাবা মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড ও গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন।
আসনটিতে মাঠে দেখা যাচ্ছে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের গণ-অধিকার পরিষদ, এবি পার্টি ও এনসিপির কোনো নেতাকে। এমনকি তাদের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রমও চোখে পড়ছে না।
জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী বলেন, আমরা এবার অত্যন্ত সুসংগঠিত হয়ে মাঠে নামছি। আশা করি, জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।