স্টাফ রিপোর্টার: সাংবাদিকতা কেবল পেশা নয়— এটি সময়ের বিবেক, জাতির মুখপাত্র। একজন প্রকৃত সাংবাদিক সমাজের আয়না, যিনি নিজের কলমে তুলে ধরেন সত্য, ন্যায় আর জনগণের নীরব আর্তনাদ।
যেখানে অন্যেরা নীরব থাকে, সাংবাদিকেরা সেখান থেকেই শুরুকরেন । অন্ধকার ঘরে আলো জ্বালানোই তাঁর ধর্ম। একজন সাংবাদিকের হাতে মাইক্রোফোন বা ক্যামেরা নয়— থাকে এক অবিচল সাহস, যেটি ক্ষমতার চোখে চোখ রেখে সত্য উচ্চারণ করে।
সাংবাদিকতা মানে শুধু খবর ছাপা নয়’ এটি ইতিহাস রচনার এক নিরব বিপ্লব। যে সাংবাদিক নির্ভয়ে কলম ধরে, সে শুধু ঘটনাই লেখে না লেখে সময়ের রূপরেখা,।
আজকের যুগে সাংবাদিকতা কঠিনতম এক যাত্রা— যেখানে প্রতিটি শব্দের দায় আছে, প্রতিটি তথ্যের পিছনে রয়েছে প্রাণের ঝুঁকি। তবুও সত্যের প্রতি অঙ্গীকারে যারা কলম তোলে, তারা জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সৈনিক।
সাংবাদিকতা শেখায়
- : কণ্ঠহীন মানুষের কণ্ঠ হতে,
- : অন্ধকারে আলোর বার্তা দিতে,
- : অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে।
একজন সৎ সাংবাদিকের লেখা হয়তো কালকের খবর, কিন্তু তার প্রভাব থাকে যুগের পর যুগ। কারণ, সংবাদ নয়— সত্যই সাংবাদিকতার প্রাণ।
সাংবাদিকতার যখন কলম বিক্রি হয়, তখন সত্য কাঁদে,
একসময় সাংবাদিকতা ছিল এক মহৎ পেশা— যেখানে একজন প্রতিবেদক নিজের জীবন বাজি রেখে লিখত জনগণের কথা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে উচ্চারণ করত সত্যের মন্ত্র।
কিন্তু আজ?
আজ যেন প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় জন্ম নিচ্ছে “সাংবাদিক” নামের এক নতুন বৃত্তি। কেউ ক্যামেরা হাতে নিলেই, কেউ দু’কলম লিখলেই নিজেকে সাংবাদিক ঘোষণা করছে। অথচ তারা জানে না— সাংবাদিকতা কেবল লিখন নয়, এটি এক দায়িত্ব, এক শপথ, এক নৈতিক জাগরণ।
দুঃখজনকভাবে এখন অনেকেই সাংবাদিকতার নামে করছে চাঁদাবাজি, ভয় দেখানো, নামের আড়ালে প্রভাব খাটানো। সমাজে এই ভুয়া সাংবাদিকরা সত্যিকারের সাংবাদিকদের সম্মানও নষ্ট করছে।
এরা বুঝে না— কলম কখনো ব্যবসার হাতিয়ার হতে পারে না। কলম হলো বিবেকের ধারালো তরবারি, যা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার হয়, লোভের জন্য নয়।
তবু আশার কথা— এখনো এই অন্ধকারে কিছু আলোর মানুষ আছেন, যারা এখনো সত্যের পথে হাঁটেন। তারা প্রমাণ করেন— সাংবাদিকতা এখনো বেঁচে আছে, এখনো কিছু কলম আছে যেগুলো বিক্রি হয় না।
সাংবাদিকতা যদি কলুষমুক্ত হয়, তবে সমাজও হবে সুন্দর। সাংবাদিকতা কোনো সাধারণ কাজ নয়— এটি এক মহৎ পেশা, যেখানে সত্য ও দায়িত্ববোধ একসাথে চলতে হয়। একজন প্রকৃত সাংবাদিক হতে হলে শুধু কলম নয়, থাকতে হয় জ্ঞান, শিক্ষা ও পেশাগত প্রশিক্ষণ।
সাংবাদিকতা শিখতে হয়, জানতে হয় — সংবাদ সংগ্রহ, যাচাই, বিশ্লেষণ, নৈতিকতা ও জনস্বার্থের পাঠ। কারণ, সাংবাদিকতা এমন এক ক্ষেত্র যেখানে একটি ভুল খবরও সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে। তাই সাংবাদিক হতে হলে
“জার্নালিজম”
বিষয়ে সুশিক্ষা অর্জন জরুরি।
কিন্তু আজকের বাস্তবতায় দেখা যায়, অনেকেই কোনো পড়ালেখা ছাড়াই নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন, শুধু পরিচয়ের জোরে চাঁদাবাজি বা প্রভাব খাটান। তারা জানে না— সাংবাদিকতা নামের আড়ালে এমন কাজ করা মানে এই পেশার পবিত্রতাকে কলঙ্কিত করা।
সত্যিকারের সাংবাদিক হতে হলে দরকার যোগ্যতা, সাহস, সততা আর শিক্ষা।
যারা এই যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি, তারা চাইলে “সোর্স” হতে পারে— অর্থাৎ তথ্যদাতা, সংবাদ সহযোগী। কিন্তু সাংবাদিক হওয়া যায় না শুধু নাম ব্যবহার করে।
কারণ, সাংবাদিকতা কোনো পরিচয়ের মুখোশ নয়— এটি জাতির বিবেক।
এখানে শিক্ষা, নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধই সবচেয়ে বড় পরিচয়।



