দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ): সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় দীর্ঘ কয়েকবছর পর ৬ টি ইউনিয়ন যুবদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ৩ টি ইউনিয়ন কমিটির শীর্ষ পদ নিয়ে জটিলতা থাকায় অঘোষিত রয়েছে। প্রকাশিত ৬ টি ইউনিয়ন যুবদলের কমিটি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানান বিতর্ক। চাহিদা অনুযায়ী পদ না পাওয়ায় কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে পদত্যাগ করতেও দেখা গেছে। অভিযোগ উঠেছে আওয়ামীলীগ পূনবার্সনেরও।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর (রবিবার) দোয়ারাবাজার উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাধব রায় ও যুগ্মআহ্বায়ক জামাল উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এসব ইউনিয়ন কমিটি প্রকাশ করা হয়।
কমিটি ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় তুমুল আলোচনা–সমালোচনা।
নতুন নেতৃত্ব ঘোষণার পর অভিনন্দনের পাশাপাশি উঠেছে নানা অভিযোগ।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন মাঠে সক্রিয় ও ত্যাগী কর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি। নীতি নির্ধারকরা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য নিজ চাহিদা মতো ব্যক্তিদের কমিটির শীর্ষ পদে দিয়েছেন।
এদিকে কমিটির ঘোষণার পর পরই বেশ কয়েকজনকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে পদত্যাগ করেছোন। চিহ্নিত চোরাকারবারি,বিজিবির উপর আক্রমনের দায়ে একাধিক মামলার আসামীকেও কমিটির শীর্ষ পদে আসিন করার অভিযোগ উঠেছে।
সবচেয়ে বেশি সমালোচনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গরম হয়ে উঠেছে লক্ষীপুর ইউনিয়ন যুবদলের নবগঠিত কমিটির সভাপতি’র পদ পাওয়া মনিরুল হোসেন ও সেক্রেটারি সাইফুল ইসলামকে নিয়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ দু’জনই আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। আওয়ামীলীগের টানা ৪ মেয়ার এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের ঘনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন তারা। ২০১৮ সালে আওয়ামীলীগের এমপি মুহিবুর রহমান মানিক কতৃক ফুলের মালা পরিয়ে সংবর্ধনার মাধ্যমে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েছেন মনিরুল হোসেন এমন একটি ছবি নিয়েও সমালোচনা তুঙ্গে। এখনও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
এতে পদত্যাগকারীরা হলেন, নরসিংপুর ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি ফয়জুল হক বকুল, দোহালিয়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ মীর ও মান্নারগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের সহসাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন রশীদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আন্দোলন–সংগ্রামে যারা মাঠে ছিলেন, তাদের যথাযথ সম্মান দেওয়া হয়নি যুবদলের নবগঠিত কমিটিগুলোতে। উল্টো আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ২৪ পরবর্তী সময়ে এমন কান্ড দলের জন্য হুমকি স্বরুপ।
একই অভিযোগ তুলেছেন ইউনিয়ন যুবদলের নবগঠিত কমিটির সহসভাপতি হারুনুর রশীদ। তিনি বলেন,আমরা বছরের পর বছর দলের কারনে নির্যাতিত হয়েছি। মামলা -হামলার ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারিনি। কিন্তু কমিটিতে যতার্থ্য মর্যাদা পায়নি।
তবে এসব বিষয়ে অস্বীকার করছেন উপজেলা যুবদলের শীর্ষ নেতারা। তাঁদের দাবি, বলয়ভিত্তিক রাজনীতি হওয়ায় সাংগঠনিক কাঠামোর কারণে যাচাই–বাছাই কিছুটা জটিল হয়েছে।
উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জামাল উদ্দিন বলেন,আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি জেলা কমিটিকে জানানো হয়েছে।
আহ্বায়ক মাধব রায় জানান,লক্ষীপুর ইউনিয়নের সভাপতির আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাতের বিষয়টি আগে জানা ছিল না। আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন,কমিটি ঘোষণার পর নেতাকর্মীদের প্রতিক্রিয়া জেলা যুবদলকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।