বুশরা আক্তার কুবি প্রতিনিধি: বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে একটি উন্মুক্ত জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র। উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিট নিশ্চিত করা। আর সেই বিশ্ববিদ্যালয় যদি হয় লালমাটির প্রাকৃতিক ছোঁয়ায় ভরপুর ক্যাম্পাস তাহলে তো কোনো কথাই নেই। কুমিল্লার কোটবাড়িতে শালবন বিহারের কোল ঘেঁষে ৫০ একর জুড়ে এই ক্যাম্পাসের অবস্থান। প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে।
আজ ১লা জুলাই কুবিতে ১৯ তম আবর্তনের ওরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে ক্লাস শুরু হয়। নতুন ক্যাম্পাসে নতুন জীবন গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল তা লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি বুশরা আক্তার।
মার্কেটিং বিভাগের ১৯ তম আবর্তনের জয়নাল আবেদিন হ্নদয় বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আমাদের জীবনে একটা যুদ্ধের মতো। এই যুদ্ধ সফল হয়ে আজকে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি সেই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। স্কুল, কলেজের প্রথম দিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমদিন অবশ্যই আলাদা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর পরিবেশ, সিনিয়রদের আন্তরিকতা সবকিছুই আমাকে মুগ্ধ করছে। আশা করছি নিজের জীবনকে সুন্দর করতে ক্যাম্পাস থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবো।
লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৯ তম আবর্তনের চৈতি রাণী দাস বলেন, এডমিশনের সময়ে আমার পরিবার আমার থেকেও বেশি কষ্ট করেছে যাতে আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ আমার প্রথম দিন, এটা আমার জীবনে অন্যরকম পাওয়া। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আমার স্বপ্নের ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক পরিবেশ গাছপালা, পাহাড় সবকিছুই আমার খুব পছন্দ। এই সৌন্দর্য প্রতিদিন উপভোগ করতে পারবো ভেবেই আমার খুব ভালো লাগছে।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ১৯তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ইকরা আক্তার জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল আমার স্বপ্ন কিন্তু ভাগ্য ভিন্ন পথে নিয়ে এলো। হতাশা কাটিয়ে নতুন করে লক্ষ্য স্থির করি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে, আর আল্লাহর রহমতে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নতুন ক্যাম্পাসে জীবনে নতুন অধ্যায় শুরু করার আশায় এসেছি। প্রাকটিক্যাল ও রিসার্চভিত্তিক পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসা থেকেই প্রত্নতত্ত্বে এডমিশন। চেষ্টা করবো যেন প্রত্ন পরিবারের সহযোগিতায় জীবনের লক্ষ্য পূরণ করতে পারি এবং আমার লাল মাটির প্রিয় বিদ্যাপীঠকে নিজের সর্বোচ্চটুকু দিতে পারি।
আইন বিভাগের ১৯তম আবর্তনের শিক্ষার্থী হাবিব উল্লাহ বলেন, ভার্সিটির প্রথম দিনের জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অনেক আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলাম। যখন গেলাম, দেখলাম বড় ভাইয়েরা আমাদের বরণের জন্য প্রস্তুত করেছে এক বর্ণিল আয়োজন, যা দেখে আমি খুবই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লাম। এ দিনটি হয়ে থাকবে জীবনের এক অনন্য স্মৃতি হিসেবে। আর স্যারদের দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণামূলক বাণী ছিল একেবারেই বর্ণনাতীত। সবশেষে ব্যাচমেটদের সঙ্গে পরিচয় হয়ে আরও ভালো লাগলো। আর ভার্সিটি লাইফের সাথে হল নতুন পরিচয়। বলতে গেলে, আজকের দিনটি ছিল আমার জীবনে একদম অন্যরকম।